ঢাকা ভার্সিটির মেধাবী ছাত্র সাতক্ষীরার সাহেদ অন্ধ হয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে
ঢাকা ভার্সিটির মেধাবী ছাত্র সাহেদুজ্জামান বাংলা বিভাগে মাস্টার্স পাশ করেও অন্ধ হয়ে পরিবার নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে। যেকোন একটি চাকুরীর জন্য প্রধান মন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের গাভা গ্রামে হতদরিদ্র জাকির হোসেনের ছেলে। সাহেদ জানান অন্য আর দশটা ছেলের মত স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠেন তিনি স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ এরপর স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পরা লেখা করার সুযোগ পান । তিনি বাংলা বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করে ২০১৩ সালে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকে। কিন্তু ভাগ্যের বড় নির্মম পরিহাস মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষার পনের দিন আগে হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করে সাহেদ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় চোখের ডাক্তার দেখানো হয় তাকে। কিন্তু তার চোখের কোন রকম উন্নতি হয়নি।পরবর্তীতে ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে ভারতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানকার ডাক্তার তাকে নিরাশার বানী শুনিয়ে বলেন তার ম্যাকুলা ডিস্টাফি রোগ হয়েছে ওই রোগের চিকিৎসা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তাছাড়া যেটুকু ঝাপসা দেখতে পাচ্ছে ভবিষ্যততে সে টুকুও দেখতে না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ডাক্তার জানিয়ে দেয়। এরপর ভারত থেকে ফিরে তার স্ত্রী শেফালি পারভীনের সহযোগিতায় তিনি পরীক্ষা দিয়ে মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর থেকে বিভিন্ন কোম্পানি সহ সমাজের বিত্তবানদের দারে দারে যে কোন একটি চাকরির খোঁজে চলেছে সাহেদ।শুধু মাত্র অন্ধত্বের কারণে সব জায়গা থেকে নিরাশ হয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে তাকে। এলাকাবাসী ও সহৃদয়বান কিছু ব্যক্তিদের সহযোগিতায় কোনরকম দুবেলা দুমুঠো ভাত যোগাচ্ছে তার স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়ে মেহরিমার মুখে। শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানের সাথে দেখা করে সাহেদ তার পরিবারের দরিদ্রতা ও অসাহয়ত্বের কথা তাকে জানালে তিনি সবকিছু শুনে তাকে আশ্বস্ত করে বলেন যদি কম্পিউটার অথবা অন্য কোন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ থাকে অবশ্যই তার জন্য তিনি নিজের অর্থায়নে সেই ব্যবস্থা করে দিবেন। এছাড়া পুলিশ সুপার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন তাকে চাকরি দেওয়ার মত সুযোগ তার হাতে নেই। দারিদ্র ও প্রতিকূলতার মাঝে ছোট বেলায় মাকে হারিয়ে বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়াশুনা করেছিল সাহেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে পাশ করলেও দেশের জন্য ও পরিবারের জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছা থাকলেও অন্ধত্ব জীবন তার সব স্বপ্নকে বিলীন করে দিয়ে বড় অসহায় করে দিয়েছে তাকে। নিজের আয়ের টাকায় আজ পরিবারের মুখে দুই বেলা দুই মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য প্রধান মন্ত্রী সহ সমাজের বিত্তবান মানুষের নিকট যে কোন একটি চাকরির জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছে অন্ধ সাহেদ।
যোগাযোগের জন্য মোঃ সাহেদুজ্জামান মোবাঃ ০১৭৭৪-১১৬৫৬৪