ওজন কমাবে ঘি!
ঘি খেলে ওজন বাড়ে? আমরা অনেকে এটি বিশ্বাস করি। স্বাস্থ্য সচেতনদের ধারণা ওজন কমানোর মূলে রয়েছে চর্বি-মুক্ত খাদ্য এবং প্রচুর ব্যায়াম।
তবে কিছু কিছু চর্বিযুক্ত খাবার আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। তার মধ্যে ঘি অন্যতম। লবণবিহীন মাখনকে চুলোয় জ্বাল দিয়ে ঘি প্রস্তুত করা হয়। ঘি একটি সুস্থ চর্বিযুক্ত খাবার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ঘি এর কদর ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র।
বিড়লা আয়ুর্বেদের মেডিকেল কন্সালটেন্ট ড. বৃন্দা লতলিকারের মতে, ‘মাখন থেকে ঘি প্রস্তুত করা হয়। ঘি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাকের আম্লিক পিএইচ হ্রাস করে আমাদের শরীরের পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ঘি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সমৃদ্ধ উৎস যা এলডিএল কোলেস্টেরল হ্রাস করে। গরুর দুধ থেকে তৈরী ঘি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। এটি আমাদের পেশীকে শক্ত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। বার্ধক্য এবং অ্যাল্জেইমারের রোগ প্রতিরোধ করে।’
দিল্লির ফোর্টিস লাফেমের পুষ্টিবিদ লাভেনিত বাত্র বলেন, ‘ঘি আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন অপসারণ করে। এতে থাকা ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর উপস্থিতি আমাদের স্বাস্থ্য উন্নতির পাশাপাশি চুল এবং ত্বককে সুস্থ রাখে। এমনকি শরীরের হাড়গুলোকে শক্তিশালী করে তোলে।’
ঘি ওজন বৃদ্ধি করে কি?
বিশেষজ্ঞদের ধারণা ঘি আপনার ওজন বাড়াবে না বরং কমাবে। পুষ্টিবিদ বাত্র বলেন, ‘ঘি আমাদের শরীরের চর্বি গলাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এটি আমাদের এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।’
সর্বোত্তম উপকার পেতে আপনি প্রতিদিন ২-৩ চামচ খান। তবে মনে রাখবেন অত্যাধিক ঘি খেয়ে আবার শরীরে চর্বি যোগাবেন না।
ড. লতলিকার বলেন, ‘যদি আপনি প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেনযুক্ত ঘি গ্রহণ করেন। তবে ধীরে ধীরে আপনার মেটাবোলিজম ক্ষমতা কমতে শুরু করবে এবং আপনার ওজন বাড়তে থাকবে।’
পুষ্টিবিদ বাত্র আরো বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে আপনি অবশ্যই এক টেবিল চামচ পরিমান ঘি খালি পেটে খান অথবা রান্নায় ব্যবহার করবেন।আপনি যেকোনো ধরণের রান্নায় ঘি ব্যবহার করতে পারেন। সেইসঙ্গে কাচা খাবারের সঙ্গেও ঘি খেতে পারেন।’
ড. লতলিকার বলেন,‘গরুর দুধের ঘি হাড়, পেশী এবং স্নায়ুতন্ত্রকে পুষ্ট করে। তার মতে, ‘রুটির সঙ্গে এমনকি খিচুরিতেও ঘি মিশিয়ে আপনার খাবারের স্বাদ বাড়াতে পারেন।’ ডঃ লতলিকার ঘি ব্যবহারের কিছু উপায়ের পরামর্শ দেন-
> এক টেবিল চামচ ঘি হালকা গরম পানি দিয়ে খেলে আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস বৃদ্ধি এবং শুষ্ক কাশি নিরাময় হবে।
> গলা, নাক এবং বুকের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দুই নাকের ছিদ্রে দুই ফোটা করে ঘি দিতে পারেন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। সেইসঙ্গে আপনার ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করার পাশাপাশি ধুলো, ধোঁয়া এবং অ্যারোসলের গন্ধজনিত এলার্জি প্রতিরোধ করবে।
> প্রতিদিন ১-২ চামচ গরুর ঘি খালি পেটে খাওয়া উত্তম। এতে আপনার রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সেইসঙ্গে এটি শরীরের কোষে থাকা জীবাণু দূর হবে।
> ২-৩ চামচ গরুর ঘি ভাত ও রুটির সঙ্গে খেলে আপনার হজম ক্ষমতা বাড়বে। এবং আপনার পরিপাকতন্ত্রকে চর্বিমুক্ত করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করবে।