কোটার নেতা তারেককে ফিরে পাওয়ার আকুতি বাবা-মার
কোটা আন্দোলনের নেতা মো. তারেক রহমানকে সুস্থ শরীরে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন তার বাবা-মা।
সোমবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা আবদুল লতিফ ও মা মোছাম্মৎ শাহানা বেগম এ আকুতি জানান।
কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান তিন দিন ধরে নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন তারা।
আবদুল লতিফ জানান, তারেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে ঢাকায় বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ফার্মগেটে কনফিডেন্স কোচিং সেন্টারে পড়তো সে। গত শনিবার রাত থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
তারেকের মা মোছাম্মৎ শাহানা বেগম বলেন, এক বন্ধু জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে তারেক বন্ধুদের বলেছে, কিছু লোক তার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। তাকে অনুসরণ করছে। ওই দিন তারেকের সঙ্গে শেষ কথা হয় আমার মেয়ের। তখন ফোনে মেয়েকে বলছিল- তাকে সাদা পোশাকে কেউ অনুসরণ করছে ও খুঁজছে। পরে ওই দিন রাত থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তারেকের বাবা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম পর্যায়েও তাকে একবার তুলে নেয়া হয়। তবে কোনো মামলা ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি বলেন, তারেক যখন কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন করছিল, পরিবারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়। আমি বলি, তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না, তুমি যেয়ো না। ও বলে, চাকরির জন্য আন্দোলন করছি। তখন আমি বলি, ঠিক আছে, তোমরা আন্দোলন করলে সরকার মেনে নিলে আমার আপত্তি কেন? তারেক প্রথমে মধ্য বাড্ডায় বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন। তবে সেখানেও পুলিশ তার খোঁজখবর করছিল। পরে ওই বাসা ছেড়ে মেসে ওঠে। তারেক রাজনীতি করতো কি না- এমন প্রশ্নে আবদুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কেউই রাজনীতি করি না। তবে আমাদের ছেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল বলে শুনেছি।
তারেকের বাবা-মা বলেন, আমরা ছেলের সন্ধান চাই। একটাই চাওয়া, ছেলেটা যেন সুস্থভাবে আমাদের কাছে ফিরে আসে। ছেলের খোঁজ না পেয়ে গত রোববার রাতে মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান তারা। তারেকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাস্থল ওই থানাধীন না হওয়ায় মতিঝিল থানা পুলিশ জিডি নেয়নি। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে শাহবাগ থানায় যান। থানা থেকে তাদের এক দিন অপেক্ষা করতে বলে তারেকের নাম-ঠিকানা লিখে রাখে পুলিশ। তারা আরো বলেন, যদি ডিবি পুলিশ তারেককে আটক করে থাকে, তবে তা স্পষ্ট করা হোক। সে যদি অপরাধ করে থাকে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে কিন্তু আমরা তার খোঁজ চাই।