মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েছে কালিগঞ্জ থানার এএসআই তারেকুর
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের মৌতলা মক্তবের মোড় এলাকা হতে চায়ের দোকানদার রাবেহান গাজী(২২)কে আটক করে মামলার ভয় দেখিয়ে ১৭ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কালিগঞ্জ থানার এএসআই তারেকুর রহমানের বিরুদ্ধে।
কলিগঞ্জের নামাজগড় এলাকার লেন্টু গাজীর ছেলে রাবেহান গাজী বলেন, মৌতলা মক্তবের মোড়ে আমার চায়ের দোকান আছে। বুধবার(১১ জুলাই) অনেকেই আমার দোকানে বসে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখছিল। দারোগারাও আমার দোকানের টিভিতে ফুটবল খেলা দেখছিল। এরপর রাত ২টার দিকে দারোগা তারেকুর রহমান আমাকে বলেন ‘তুই মাদকের ব্যবসা করিস। চল এখনই থানায় যেতে হবে। এরপর আমাকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। তারপর আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। আর বলে বাড়ি হতে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বল। ৩০ হাজার টাকা না দিলে তোকে ৫০ পিছ বড়ি(ইয়াবা) দিয়ে চালান করে দেবো। আমার বাবা থানায় গেলে তাকেও একইভাবে টাকা আনতে বলা হয় আর মামলার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর বাড়ি হতে ১৭ হাজার টাকা এনে আমার এক ডাক্তার বন্ধুকে সাথে নিয়ে আমার বাবা দারোগাকে দেয়। ওই দিন আমাকে মাদকসেবী হিসেবে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করলে বিচারক ১ হাজার টাকা জরিমানা করে।
এর আগে দারোগা আমাকে বলে, ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক জিজ্ঞাসা করলে বলবি ‘আগে মাদক সেবন করতাম এখন করি না।’
কালিগঞ্জ থানার এ এস আই তারেকুর রহমান বলেন, স্থানীয় সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে এএসআই সাইদুর রহমান, এএসআই ফেরদৌসকে সাথে নিয়ে আমি রাবেহানকে আটক করি। পরে ওসি স্যরের নির্দেশনায় তাকে ভ্যাম্যমান আদালতে নিয়ে গেলে আদালতের বিচারক রাবেহানকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে। যা কিছু করা হয়েছে ওসি স্যারের নির্দেশনাতেই করা হয়েছে।
রাবেহান মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক সেবী কি না সে ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয় তবে সে মাদক ব্যবসায়ী বা মাদকসেবী কি না তা আমি বলতে পারবো না।’
এছাড়া টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক না। টাকা যদি নিতাম তবে তাকে ছেড়ে দিতাম, ভ্রাম্যমান করাতাম না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, আইনের দৃষ্টিতে ছেলেটাকে যা করার প্রয়োজন ছিলো তাই করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সে বা তার পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে এগুলো রটাচ্ছে। আর দারোগা টাকা নিয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।
সহকারি পুলিশ সুপার( কালিগঞ্জ সার্কেল)ইমরান মেহেদী হাসান সিদ্দীকি বলেন, এ ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। তবে ভয় দেখিয়ে যদি কেউ টাকা নেয় তবে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।