শ্যামনগরের ফরেস্ট স্টেশনে ঘুষ না দিলে জুটছেনা পারমিট: হতাশায় জেলেরা
সাতক্ষীরার সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে জেলেদের পাশ পারমিটে ও বিএলসি নবায়নে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তারা । উর্ধ্বতন বন কর্মকর্তার সাথে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তার সখ্যতা থাকায় পার পেয়ে যাচ্ছেন দূর্ণীতিবাজ কর্মর্তারা।
ভুক্তভোগী জেলেরা জানান, বিএলসি নবায়নে সরকারী নিয়মানুযায়ী প্রতি ১০ কুইন্টাল (১০০০ কেজি) এ ৫ টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও সেখানে নেওয়া হচ্ছে ৬‘শ থেকে ১২‘শ টাকা। আর নতুন বিএলসিতে নেয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়া মাছ ও কাঁকড়ার পাশ পারমিটে সপ্তাহে জনপ্রতি ৬০ থেকে ৯০ টাকার স্থলে নেয়া হচ্ছে ২ থেকে ৩‘শ টাকা। এসব অতিরিক্ত টাকা জেলেরা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এসব টাকা বন বিভাগের কেউ সরাসরি নিচ্ছে না। এখানেও দালাল নিযুক্ত করা হয়েছে। নীলডুমুরের শহীদুল মোল্লা, জালাল মোল্লা, হাসান দোকানদার ও ইসমাইল সানা এবং গাবুরার মজিদ গাজী, আলেক গাজী বন বিভাগের দালাল হিসেবে কাজ করছে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন অফিসার কে.এম কবির উদ্দীনের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউনুস গাজী বলেন, সরাসরি অফিসে গেলে বিএলসি এবং পাশ দেয়না। অন্য মাধ্যমে আসার জন্য বলা হয় । অতিরিক্ত টাকা দিতে কোন আপত্তি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বন-বাদা করে খেতে হয়। যত টাকা লাগুক না কেন, বনে আমাদের যেতে হবে। বনে না গেলে খাবো কি.? সংসার চালাবো কিভাবে! পাশ পারমিট ও বিএলসি নবায়নের অতিরিক্ত টাকা না দিলে পাশ, বিএলসি নবায়ন বা নতুন বিএলসি দেয় না। আমরা যদি কারও কাছে নালিশ করি তাহলে উল্টো বাঘ হত্যা মামলা, হরিণ, বন্য প্রাণী চুরি সহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানীর ভয়ভীতি দিয়ে টাকা আদায় করা হয়। এদিকে কাঁকড়া আরোহী কুদ্দুস গাজী (৪৮) কে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার কর্তৃক হুমকি দেওয়া হয়েছে মর্মে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি ৭ জুলাই শ্যামনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। যার জিডি নং-৩১৪।
সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা কে.এম কবির উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে কোন জেলে এসে ফিরে যায় না। আমাদের কোন সোর্স নেই। আমাদেও অফিসের কোন স্টাফ জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোন অভিযোগ নেই। বিএলসি রেট জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি ১০ কুইন্টাল (১০০০ কেজি) এ ৫ টাকা সরকারি মূল্য নির্ধারিত হয়েছে। অফিস বাদে কে কত টাকা আদায় করছে তা আমার জানা নেই। সব কিছু সঠিক নিয়মেই চলছে। আমার জানা মতে এখানে কোন অনিয়ম বা দূর্ণীতি হয় না।