ভোমরায় ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় প্রতারক পুলিশ সদস্যের জামিন নামঞ্জুর
সাতক্ষীরার ভোমরায় ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় প্রতারক পুলিশ সদস্যের জামিন নামঞ্জুর করেছে বিজ্ঞ আদালত। গত ১৪/০৬/১৮ ইং তারিখে জামিনের জন্য আবেদন করে প্রতারকের পরিবার। কিন্তু বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত নং-১ সাতক্ষীরা প্রতারক মানিক খাঁনকে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। উল্লেখ্য, উক্ত পুলিশ সদস্য যশোর কোতোয়ালী থানার নুরপুর উত্তরপাড়ার গোলাম নবী খাঁন পুত্র মানিক খাঁন (২৪)। সে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ লাইন্সের কনস্টবল/৫৯১ হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সে সময় সাতক্ষীরার ভোমরা লক্ষিদাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী পরিমল কুমার রায়ের পরিচালিত লোকনাথ মানি এক্সচেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠান থেকে গত ইংরেজি ৩০/৩/১৮ তারিখে সাড়ে বারোটার দিকে ডিবি পুলিশ সেজে ছদ্মনাম সাহাজুল কায়েস ব্যবহার করে ঐ প্রতিষ্ঠানে তল্লাসি করার নামে প্রবেশ করে। তল্লাসি করে কোন কিছু না পেয়ে সাদা কাগজে ব্যবসায়ীর নাম, পিতার নাম, মোবাইল নাম্বার লিখতে থাকে। এসময় কৌশলে প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ বক্সে থাকা ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে ব্যবসায়ীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। পরে ব্যবসায়ীকে নিয়ে পদ্ম শাঁখরা রোডে দাঁড় করিয়ে উপরের অফিসার আসছে বলে ঐ স্থান থেকে চম্পট দেয় পুলিশ কনস্টবল মানিক খাঁন। বিষয়টি সন্দেহ হলে ব্যবসায়ী সাতক্ষীরা জেলা ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে খবর নিয়ে জানতে পারে সাহাজুল কায়েস নামে কোন পুলিশ সদস্য নেই। কিছু দিন পরে পুন:রায় প্রতারণা কালে যশোরে ওয়্যারলেস সহ আটক হওয়ার বিষয়টি পত্রিকায় ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হয়। ভোমরার ব্যবসায়ী পরিমল কুমার পত্রিকায় তার ছবি দেখে চিনতে পারে। এরপর তিনি অনেক খোঁজাখুঁজি করে প্রতারক মানিকের পরিচয় জানতে পেরে গত ৩/৫/১৮ তারিখে সাতক্ষীরা সদর থানায় ১৭০/৪১৯/৪০৬/৩৮০/৫০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মোহাম্মাদ মিরাজ আহম্মেদ প্রতারক মানিক খাঁনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সাতক্ষীরার সিনিয়র চিপ জুডিশিয়াল আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ ২দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে গত ১৪/০৬/১৮ ইং তারিখে প্রতারকের পরিবার জামিনের জন্য আবেদন করলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত নং-১ সাতক্ষীরা প্রতারক মানিক খাঁনকে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। তাছাড়া, প্রতারক মানিক খাঁন ইতিপূর্বে যশোরের ফজলে করিম এন্টারপ্রাইজ থেকে তার স্ত্রীর নাম্বারে ৫ হাজার একশত টাকা বিকাশ করে পালানোর সময় সাত মাইল নামক স্থান থেকে আটক হয়। এসময় তার কাছে একটি ওয়াকিটকি পাওয়া যায়। পরে কোতোয়ালী থানা পুলিশের দায়েরকৃত পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় আটক হয়। ১৭ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড হলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ কালে জেল গেট থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় ধুরন্ধর মানিক। পরে পুলিশের একটি টিম সাতক্ষীরার আশাশুনিতে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে জানাগেছে।