কলারোয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের আকাশছোঁয়া মূল্য
কামরুল হাসান,কলারোয়া :
পবিত্র মাহে রমজানের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বিশ্বের অনেক দেশে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য রোজার মাসে যেখানে অন্যমাসের তুলনায় কম নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় খাদ্যপণ্যের দাম দিগুণ বাড়িয়ে দেয়। যার ধারাবাহিকতায় কলারোয়ার বিভিন্ন বাজারে কাঁচামালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর লাগামহীন মূল্য নিতে দেখা যাচ্ছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অধিক মূল্য নির্ধারণের ফলে চরম অসহায় হয়ে পড়ছেন স্বল্প আয়ের রোজাদার মুসুল্লিরা। আর এজন্য বাজার ব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কলারোয়ার সর্ব শ্রেণি পেশার মানুষ।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরসহ ১২টি ইউনিয়নের প্রতিটি বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য গত সপ্তাহের তুলনায় অধিক মূল্যে বেচা-কেনা হচ্ছে। কলারোয়া বাজারের আনিছুর, ঝিকরা গ্রামের মনিরুল ইসলাম মনি, শহিদুল ইসলাম, মির্জাপুর গ্রামের লিংকন, চেঁড়াঘাটের আনারুল, খোরদোর মাসুদ, কামারালীর আবুবকর ছিদ্দীকসহ একাধিক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান- ক্ষীরা বা শসা ২/১দিন আগেও কেজিপ্রতি দাম ছিলো ২০ থেকে ২৫ টাকা, সেটি এখন ৫০ টাকায় পৌঁছে গেছে। গাজরের অবস্থাও ক্ষীরার মতো। খেজুর বা খোরমার দাম ছিলো ১৫০ থেকে ২২০ টাকা, যার দাম হয়েছে ৩০০-৪০০টাকা। কেজিপ্রতি ৮টাকা দরের তরমুজের দাম হয়েছে কেজিপ্রতি ২০টাকা। পেয়ারার দাম হয়েছে ৮০টাকা।
তারা আরো জানান-বেগুনের দাম ছিলো ২০টাকা, তা এখন ৩৫টাকা। আলু ছিলো ১৫টাকা, তা এখন ২০টাকা। কাঁচাঝাল ৪০ থেকে পৌঁছে গেছে ৬০টাকায়, ভারতীয় পিঁয়াজ ২০’র স্থলে ৩০ ছুঁইছুঁই, আর দেশি পিয়াজ ৩৫ থেকে একলাফে গেছে ৪৫ টাকা। ২০টাকার টমেটো এখন ৮০ টাকা। রমজানের অন্যতম খাদ্য সামগ্রী ৭০ টাকার গুড় এখন ১০০ বা তারও বেশি। পাকা কলা ৩৫/৪০ থেকে নতুন দাম হয়েছে ৫০/৭০টাকা। কাঁচাকলা ২০ থেকে সরাসরি পৌঁছেছে ৩৫ টাকায়, পানের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। কাগুজি লেবু তো হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, যে লেবু পিচপ্রতি ১ টাকা ছিলো তা বাজার ভেদে দাম হয়েছে পিচপ্রতি ৫ থেকে ৮ টাকায়। ৫৫ টাকার চিনির দাম হয়েছে ৫৮-৬০ টাকা। তবে ছোলার দাম রয়েছে অনেকটা স্থিতিশীল, বাজার ভেদে দেশি ছোলা ৭০-৭৫ টাকায় থেমে আছে। মুসুরির ডাল ৬০ থেকে এখন ৮০ টাকা। গরুর মাংসের দাম ছিল ৪২০ তা এখন ৪৫০। পোল্ট্রি, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগীর দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০-৩০ টাকা। তবে খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত। লোনা ও দেশীয় মাছে প্রতি কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ২০-৩০ টাকা।
ফলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা, বিপদে পড়ছেন দিন আনা দিন খাওয়া রোজাদার মানুষেরা।
আর খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা গতানুগতিক অজুহাত দেখিয়ে জানালেন- রমজান উপলক্ষে প্রতিটি কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্যের সংকট দেখা দেওয়ায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণ ক্রেতারা অবিলম্বে বাজার মনিটরিং করে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের প্রতি।