বাড়ি উঠতে পারছে না চাচাই গ্রামের গৃহবধূ মনোয়ারা
শহর প্রতিনিধি :
স্বামীর অত্যাচার নির্যাতনে নিজ বাড়িতে উঠতে পারছেন না গৃহবধূ মনোয়ারা খাতুন। তাকে খুন করা হবে এই হুমকি দিয়ে বাড়িতে উঠবার পথও বন্ধ করে দিয়েছে স্বামী আকবর। এসব নিয়ে আদালতে একটি মামলা করলেও পুলিশ তা রেকর্ড করেনি। এতে মনোরায়ার স্বামী হয়ে উঠেছে আরও বেপরোয়া।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন কালিগঞ্জের চাচাই গ্রামের জব্বার গাজির মেয়ে মনোয়ারা খাতুন। তিনি ওই গ্রামের আবদুর রবের ছেলে আকবর আলির স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন তিন বছর আগে বিয়ের পর থেকেই আকবর তার ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালাতো। তার কাছে যৌতুকের টাকা চাইতো। না দিলে মারপিট করতো। এসিড মেরে মুখ ঝলসে দেবে বলে হুমকি দিতো। এক পর্যায়ে অতীষ্ঠ হয়ে মনোয়ারা চলে আসে বাপের বাড়ি। এ সময় মনোয়ারা আদালতে একটি যৌতুকের মামলা করেন। সে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করে আকবর । কিন্তু মনোয়ারা মামলা তুলতে সম্মত না হওয়ায় স্বামী আকবর গত ১৫ এপ্রিল তার বাপের বাড়ি আসে। এ সময় সে মনোয়ারার বাবা মা অভিভাবক ও আত্মীয় স্বজনের সাথে বসে প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে আর কখনও মনোয়ারার ওপর নির্যাতন করবে না। বরং শান্তিপূর্নভাবে সংসার করবে। মনোয়ারা জানান তার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে তার বাবা মা তাকে জামাতা আকবরের হাতে ফের তুলে দেন। কিন্তু ধুরন্ধর আকবর আলি তাকে শ্যামনগরের কৈখালির একটি বাড়িতে বেড়াতে যাবার নাম করে নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাড়িতে আটকে রেখে রাতভর তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। গভীর রাতে স্বামী আকবর ও তার সহযোগীরা মনোয়ারাকে ভারতে পাচারের লক্ষ্যে কৈখালি সীমান্তে নিয়ে যায়। ভারতে পাচারের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তারা তাকে কালিন্দিী নদী তীরে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। মনোয়ারা বাপের বাড়ি ফিরে এসে স্বামী আকবর ও তার সহযোগী নয় জনের নামে ১৭ এপ্রিল সাতক্ষীরার আদালতে মানবপাচার মামলা করেন। পিটিশন মামলা নম্বর ১৯২/১৮। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কালিগঞ্জ থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। অথচ সে মামলাটি আজও রেকর্ড হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন মামলা দায়েরের পর থেকে আকবর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। গত ১৪ মে তারিখে তার বাপের বাড়িতে সে ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় হুমকি দিয়ে বলে আসে মামলা না তুললে তোকে শেষ করে দেবো। মনোয়ারা বলেন বাপের বাড়িতে স্বামীর হামলার কারণে তিনি তার দুটি সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি ছেড়েছেন । এখন মনোয়ারা সাতক্ষীরা শহরে এক স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি তার দুই সন্তান, পিতা মাতা এবং নিজের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মনোয়ারা বলেন আমি স্বামীর বাড়িতে উঠতে চাই। এ সবের প্রতিকার চেয়ে ও স্বামী আকবরের শান্তি দাবি করে মনোয়ারা সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।