কলারোয়ার বেত্রবতী নদীকে ঘিরে সৌন্দর্যতা আর বিনোদন স্পটের সম্ভাবনা

জুলফিকার আলী,কলারোয়া:

কলারোয়ার বুক চিরে যাওয়া বেত্রবতী নদীকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে চিত্তবিনোদনের অন্যতম স্পট। পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান আর সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সহায়ক হতো বেত্রবতী নদী। কেননা নদী ও নদীর দু’ধারের বহু স্থানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যতা, পশু-পাখির অভয়ারণ্য কিংবা মিনি চিড়িয়াখানায় রূপান্তর ও শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন মানুষের বিনোদনের জন্য নানান ইভেন্ট তৈরির মাধ্যমে পিকনিক স্পটের সম্ভাবনা ছিলো-আছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাময় সম্ভাবনা স্থান হয়ে যাচ্ছে মনুষ্যসৃষ্ট অবহেলা আর অব্যবস্থাপনায়। সরেজমিনে দেখা যায়- কালক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে সাতক্ষীরার কলারোয়ার বেত্রবতী নদীর সৌন্দর্যতা। কতিপয় স্বার্থনেষি মহলের কারণে উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া এককালের স্রোতধারা নদী আজ স্রোতহীন মৃতপ্রায়। প্রতিনিয়ত মনুষ্যসৃষ্ট অত্যাচারে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে বেত্রবতী। স্থানীয় অনেকে বেত্রবতীকে বেতনা নদী বলেও অবহিত করে থাকেন। বেত্রবতীকে ঘিরে বিনোদনের অন্যতম স্পট এবং নদী ও নদী পাড়ের প্রকৃতির সৌন্দর্যতা নিয়ে ব্যবসায়িক উদ্যোগ, কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা আজ দূ:স্বপ্নে পরিণত হচ্ছে। সরেজমিনে আরো দেখা যায়- কতিপয় প্রভাবশালীরা বেত্রবতী নদী আংশিক দখলের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে, কেউবা নদীর ভেতর বেদখল করে ধান-পাট চাষ করছে। আবার অনেকে সমস্ত আবর্জনা ও ময়লা ফেলছেন এই নদীতে। ফলে নদীটির আসল সৌন্দর্যতা আর রূপ বিলীন হওয়ার শেষ প্রান্তে। জানা যায়- ব্রিটিশ আমলে এই নদীতে ইংরেজরা ছোট-বড় জাহাজ যোগে চলা ফেরা করতো। ব্যবসা বাণিজ্যের জন্যও নদীতে নৌযান চলতো। কয়েক দশক আগেও ছোট-বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, ট্রলার, এমনকি ল ও চলতো। কিন্তু বর্তমানে নৌকা চলতেও দেখা যায় না। শুধু তাই নয়, অবশিষ্ট নদীর পানিও প্রায় নষ্ট ও দূষিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া শ্যাওলা-কচুড়িপনা প্রায় স্থায়ীরূপে পানির উপর অবস্থান করায় নদীতে পানি প্রবাহ যেমন হচ্ছে না তেমনি পানিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি নদীর পানিতে নামেন তাহলে তার শরীরে চুলকানি, ঘা-পাচড়া ইত্যাদি রোগ দেখা দিচ্ছে। তার সাথে যোগ হয়েছে কতিপয় মানুষের দ্বারা বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে মাছ শিকার কিংবা অন্য কাজে ব্যবহৃত হওয়ায়। নদীর তলদেশ ভরাট আর পানিপ্রবাহ না থাকায় জোয়ার-ভাটাও এখন আর দৃশ্যমান হয় না।এর পাশাপাশি নদী তীরের সৌন্দর্যময় অপরূপ দৃশ্য হারিয়ে যেতে বসেছে দিনকে দিন। অথচ বেত্রবতী নদীকে ঘিরে ও নদীর দু’ধারে বিনোদনের অন্যতম স্পট হতে পারতো কলারোয়া বাসীর জন্য। এ নদী ও নদী পাড়ের প্রকৃতির সৌন্দর্যতা আর বিনোদনকে মাথায় রেখে ব্যবসায়িক উদ্যোগ, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। সমস্যা আর সম্ভাবনাকে সম্মিলিত প্রয়াসে ইতিবাচক মনোভাবে এগিয়ে আসতে পারে বিত্তবানরা ও সরকারি উদ্যোগ। স্বপ্ন আর বাস্তবায়নের সেতুবন্ধত হতে পারে আমাদের ইচ্ছাশক্তি। এমনটাই মনে করছেন অনেকে। সম্ভাবনাময় এ উদ্যোগকে সামনে রেখে অচিরেই বেত্রবতী নদী রক্ষার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)