সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে জনবল নিয়োগে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালে আউট সোর্সিং জনবলের ঠিকাদার নিয়োগে লাগামহীন দুর্নীতি,বিএনপির ক্যাডার দুলালের কার্যাদেশ বাতিলের দাবিতে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সচেতন সাতক্ষীরাবাসীর আয়োজনে ১৩ মে রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান সোহাগ। সাবেক ছাত্র নেতা মারুফ আহমেদের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কালিগঞ্জ সাতক্ষীরা সড়কের বাঁকাল এলাকায় মেডিকেল কলেজের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্র নেতা শেখ মারুফ হোসেন, কৃষকলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, সদর যুবলীগের সেক্রেটারি মইনুল ইসলাম ও সভাপতি মিজানুর রহমান।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এ সরকারের দেওয়ার সাতক্ষীরা বাসীর জন্য একটি অনন্য অবদান। কিন্তু সাতক্ষীরাবাসী মেডিকেল কলেজের সুফল ভোগ করতে পারছে না। জনবল সরবরাহের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৮ সালের জানুয়ারি মাসে জনবল নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করা হলে সাতক্ষীরার একজন ঠিকাদারসহ সারাদেশের ৮জন ঠিকাদার অংশগ্রহণ করে। পিমা এসোসিয়েট লিমিটেড সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় এবং “সলুসন ফোর্স লিঃ একুশে সিকিউরিটি সার্ভিস প্রাঃ লিঃ সর্ব নিম্ন দরদাতা হওয়ার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টেন্ডার বাতিল করে দেন পরবর্তীতে প্রিম এসোসিয়েট এর দেলোয়ারের নির্দেশ মত শর্ত দিয়ে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে। গোপন চুক্তির ভিত্তিতে প্রিম এসোসিয়েট লিঃ এর মালিক বরিশালের মেহেদিগঞ্জ থানার জয়নগর ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করে পরাজিত দেলোয়ার হোসেন দুলালকে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করে। অন্যদিকে মেডিকেল কলেজে ৪৬ জনের জনবল সরবরাহের টেন্ডার পায় প্রিমা এসোসিয়েট লিঃ যা চলছে গত ৪ বছর ধরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে ১৪৫৫০ টাকা বেতন প্রদান না করে প্রদান করে ৭ হাজার টাকা তাও আবার ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে না দিয়ে বেতন দেয় হাতে হাতে। শুধু মাত্র আওয়ামীলীগ করার অপরাধে আমাদের প্রতিষ্ঠান বরাবরে কার্যাদেশ না দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি নেতার প্রতিষ্ঠান প্রিমা এসোসিয়েট লিঃ নামে কার্যাদেশ প্রদানের ষড়যন্ত্র করেছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের কার্যাদেশ প্রদানের উদ্দেশ্যে তারা ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ছুটির দিনে মূল্যায়ন কমিটির বোর্ড বসায় যখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সারা দেশের মানুষ স্বাধীনতা উদযাপনে ব্যস্ত তখন মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে পরাজিত দুলালকে কার্যাদেশ প্রদানের জন্য। এছাড়া হাসপাতালে গ্যাস প্লান্ট সংযোজন বাবদ ৫ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হলেও বাস্তবে কোন গ্যাস প্লান্ট আজও সংযোজিত হয়নি। ১৪ সালের কার্যাদেশে সিটি র্ক্যান মেশিন ক্রয় বাবদ সাড়ে সাড়ে আট কোটি টাকা সরকারি মূল্য থাকলেও বাস্তবে দশ কোটি পঁচাত্তর লাখ টাকা পরিশোধ দেখানো হয়েছে। কার্যাদশের মেয়াদ না থাকা সত্বেও ব্যাগডেটে রিসিভ দেখিয়ে মূল্য দেওয়া হয় ঠিকাদারের ১৬-১৭অর্থ বছরে এম.এস আর ক্রয় সংক্রান্ত দরপত্র দাখিলের চার মাস পর শর্তাবলি পরিবর্তন করে দরপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে কার্যাদেশ জারি সর্বনিম্ন দরদাতা“ বেনিবুলাম’ নামক প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে গোপন চুক্তির ভিত্তিতে অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়িন্টিফিকস এর মালিক জহির নামক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়।
বক্তারা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের একটি অংশ জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তাদের সাথে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। ওই অংশের উপর ভর করে স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাতক্ষীরার মানুষ এটা হতে দেবে না। মেডিকেল কলেজে ওই সব কর্মকর্তাদের হুশিয়ারী প্রদান করে বক্তারা বলেন প্রয়োজনে আমরা মেডিকেল কলেজকে অচল করে দেবো। এখনো সময় আছে দুর্নীতি বন্ধ করুন। তা না হলে সাতক্ষীরাবাসী কাউকে ছাড় দেবে না। বক্তারা অবিলম্বে মেডিকেলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শাহাজান, হিসাব রক্ষক মুস্তাজুল এবং ওয়ার্ড মাস্টার মুরাদ হোসেনের অব্যাহতি, গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে মেডিকেলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারণ জনতা।