আশাশুনি-ঘোলা সড়ক যেন মরণ ফাঁদ
নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে কোলা-ঘোলা পর্যন্ত উপজেলার অন্যতম প্রধান সড়কটি চলাচলে একবারেই অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে সংস্কার করা না হলে এলাকাবাসীকে স্কুল, কলেজ, হাট-বাজার, সাধারণ মানুষের পোহাতে হবে সীমাহীন দুর্ভোগ। সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় পরিনত হওয়া ১৮ কিঃ মিঃ রাস্তার বেশিরভাগ অংশই যেন এখন মরন ফাঁদ। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তায় জল জমে থাকে, ফলে যাত্রীরা চলছে জীবনের ঝুকি নিয়ে। দেখবে কে ?
সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, রাস্তায় অধিকাংশ জায়গায় পিচ উঠে বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বর্ষায় রাস্তা দিয়ে পায়ে হাটা এবং ভ্যান ও সাইকেলের যাত্রীরা বাস এবং দ্রুতগামী কোন যানবাহন আসতে থাকলে পথচারীরা রাস্তা ছেড়ে পালাতে থাকে। কারণ খাদের জল এসে পথচারীদের জামাকাপড় নষ্ট করে দেয়।
জনৈক বাস ড্রাইভার জানান, ঘোলা বাস স্ট্যান্ড থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে গাড়ী ছাড়লে দ্বি-মুখী চিন্তায় পড়তে হয়। এক দিকে যাত্রীদের নিরাপত্তার অন্য দিকে জরিমানার ভয়ে। এ রাস্তায় গাড়ী চালাতে গা শিউরে ওঠে। বাস মালিক কর্তৃপক্ষ ইট দিয়ে বিভিন্ন খাদ ভরাট করায় কোন রকমে নিজের ও যাত্রীদের প্রাণ হাতে নিয়ে গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছি।বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার লোক আশাশুনি, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর ও সাতক্ষীরা জেলা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। সড়কটিতে যাত্রীবাহী বাস, মিনিবাস, ট্রাক, নছিমন, করিমন, ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল সহ প্রভৃতি যানবাহন চলাচল করে থাকে।
সড়ক সংলগ্ন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে রয়েছে আশাশুনি বাসস্ট্যান্ড, হাড়িভাঙ্গা বাজার ও মৎস্যসেট, মহিষকুড় মৎস্যসেট, নাকতাড়া-কালিবাড়ী বাজার, মাড়িয়ালা মৎস্য সেট ও হিজলিয়া বাস স্ট্যান্ড ও হাট। এসব বাজার ও মৎস্য সেটে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বেঁচাকেনা হয়ে থাকে। সড়কটি ব্যবহার করেই ব্যবসায়ীরা দক্ষিণাঞ্চলের সাদা-সোনা খ্যাত চিংড়ী মাছ সহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করে থাকে। সড়কটির উপর দিয়েই এ অঞ্চলে উৎপাদিত লক্ষ লক্ষ টন চিংড়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো সহ বিদেশেও রপ্তানী হয়ে থাকে। যার মাধ্যমে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব অর্জন করে থাকে। ফলে এটি উপজেলার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কিন্তু সড়কটির বিভিন্ন জায়গা দীর্ঘদিন থেকে খানা-খন্দকে পরিনত হয়ে আছে। সরেজমিনের ঘুরে দেখাগেছে, ১৮ কিঃ মিঃ এ সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। সড়কটিতে যানবাহনে চলাচলের দূর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পেতে অনেকে পায়ে হেটে চলাকে নিরাপদ মনে করছে। কিন্তু বাস্তবে সেটি সম্ভব না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।
আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান স,ম সেলিম রেজা মিলন জানান, এ রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আমরা বিভিন্ন পরিসরে কথা বলে যাচ্ছি। রাস্তাটি সর্বসাধারণের যাতায়াতের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে। রাস্তাটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। এব্যাপারে এলাকাবাসি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনজুরুল করিম জানান, আশাশুনি থেকে নাকনা পর্যন্ত ১৮ কিঃ মিঃ রাস্তা নির্মানের জন্য ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। একনেকে বর্তমানে ফাইলটি রয়েছে। আশাকরছি শিঘ্রই প্রকল্পটি পাশ হবে। চলতি অর্থ বছরে কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।