কালিগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধুকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি :
কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে লিমা পারভীন নামে এক গৃহবধুর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে নৃশংস ভাবে পুড়িয়ে দেওয়ার ১৭ দিন পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা গফ্ফার গাজী বাদী হয়ে দুই সপ্তাহ পরে গতকাল শুক্রুবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায় তারালী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের আকবার আলী সানার ছেলে আকরাম হোসেনের (২৪) সাথে একই ইউনিয়নের বরেয়া গ্রামের গফ্ফার গাজীর মেয়ে লিমা পারভীনের (১৯) সাথে দুই বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের এক পর থেকে লিমার শশুর এক লক্ষ টাকা দাবী করে তার পিতার কাছে। ৭৫ হাজার টাকা ব্যবসা করার জন্য জামাই আকরামকে দিলে আবার ও একটি নতুন মটর সাইকেল দাবী করে । গরীব পিতা মটর সাইকেল দিতে ব্যার্থ হলে এক পর্যায়ে গত ১৭ জানুয়ারি বেলা ২ টার দিকে যৌতুকের টাকার সূত্র ধরে শাশুড়ি জাহানারা খাতুন পুত্রবধূ লীমা পারভীনকে ঝাড়– দিয়ে বেদম মারপিট করে শরীরে প্রেট্রোল ঢেলে দেয়। এসময় ওই গৃহবধূর স্বামী আকরাম হোসেনের সহায়তায় দেয়াশলাইয়ের কাঠি জে¦লে শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় পাষন্ড শ^শুর আকবর সানা। শরীরে দাউ দাউ করে জ¦লতে থাকে আগুন। গৃহবধূর চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ঘরের দরজার শিকল লাগিয়ে দিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় আকরাম, তার পিতা আকবর ও মাতা জাহানারা। পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষার আগেই শরীরে অধিকাংশ স্থান ঝলসে যায় লীমা পারভীনের। এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে নেয়া হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে মারাত্মক দগ্ধ ওই গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১৭ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াইয়ের পর ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা ৩ টার দিকে লীমা পারভীন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে বলে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন তার চাচা আব্দুল জব্বার গাজী। উপ-পরিদর্শক লিয়াকত হোসেন বলেন ,আব্দুল গফফার গাজী তার মেয়ের মৃত্যুর একদিন আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় জামাতা আকরাম, বেয়াই আকবর সানা ও বেয়াইন জাহানারা খাতুনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রাতে মামলা হিসেবে রেকর্ডভূক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ।
এই নৃশংস ঘটনায় এলাকাবাসী প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবী জানিয়েছে ।
Please follow and like us: