কালিগঞ্জ সীমান্তে আবারো মাদক ব্যবসায়ীদের রমরমা ব্যবসা
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে হঠাৎ করে ভারত থেকে আসছে মাদকের চালান। পুলিশের অভিযানে গত ২ মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে মাদক ভারতীয় ফেনসিডিল, মদ ও গাঁজা। তবে বর্তমানে বিভিন্ন মাদকের গড ফাদাররা প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাস থেকে নভেম্বর মাসে পুলিশের অভিযানে পৃথক অভিযানে প্রায় ৪ হাজার বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল, ১ কেজি গাঁজা ও ৪ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার হয়েছে। এসব মাদক মূলত: খানজিয়া, শুইলপুর, বসন্তপুর ও উকশা সীমান্ত দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকেছে। কিন্তু বর্তমানে দুই মাসে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদকের ছড়াছড়ি থাকলেও কালিগঞ্জ মাদক ব্যবসায়ীরা থেকে গেছে ধরাছোয়ার বাইরে । থানায় মাদকের গড ফাদারদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও বর্তমানে চোরকারবারীরা থেকে যাচ্ছে নিরাপদে। থানা সূত্রে জানা যায় ৮ অক্টোবর রাতে উপজেলার শুইলপুর সীমান্তে একটি আম বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৬৫০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার হয়।১৯ অক্টোবর ভোরে কালিগঞ্জে বাগনলতা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি ড্রামের ভিতর থেকে পাওয়া যায় ৩ হাজার বোতল ফেনসিডিল। এব্যাপারে মামলা হলেও কেউ আটক হয়নি। ২৮ অক্টোবর রাতে শুইলপুর সীমান্তের বাগবাটির জালালতলা থেকে আরও ১২৫ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের উজায়মারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখে একটি ধান ক্ষেত থেকে ৪ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার হয়েছে। এখানেও মাদক চোরাকারবারীদের চিহিৃত করা সম্ভব হয়নি। ১০ অক্টোবর রাতে ৯০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক হয় গৌর বিশ্বাস (৩৬) ও রফিকুল ইসলাম (৩২) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী। এছাড়াও ৮ অক্টোবর সকালে উপজেলার কৃষ্ণনগর বাজার এলাকা থেকে ১ কেজি ভারতীয় গাঁজাসহ মোস্তাফিজুর রহমান (৪৭) নামে এক ব্যক্তি আটক হয়। শুইলপুর ও খানজিয়া এলাকা দিয়ে মূলত: বেশীরভাগ মাদক দেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদকের অংশ বিশেষ আটক করতে সক্ষম হয়েছে। একাধিক বিশস্ত সুতরে জানা যায়, বর্তমান চলছে মাদক ব্যবসা এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী জহুর আলী ও কোটিপতি আমজাদ, এছাড়া এলাকার মাদকের গডফাদার তারা সক্রিয় ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। উল্লেখযে জহুর আলী থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে ভবিষ্যতে আর মাদক ব্যবসা করবে না বলে অঙ্গীকার করে। এরপর তার সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে জহুর আলীর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (৩৮), ছেলে শাহীন আলম (২৫) ও ভাই মাসুদ (৩৫) ।
সম্প্রতি ৫৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে আটক হয় জহুর আলীর ছেলে শাহীন। মাদক ব্যবসায়ী জহুর আলীর শুইলপুর ও খুলনার রূপসা এলাকায় রয়েছে বিশাল আকৃতির বাড়ি। এছাড়াও নলতায় তিনি নির্মাণ করছেন একটি মার্কেট। কোটি কোটি টাকার সম্পদ তিনি অর্জন করেছেন যার অন্যতম মাধ্যম মাদক ব্যবসা।
অপরদিকে, মাদকের জগতে কোটিপতি আমজাদ ফেনিসিডিল,ইয়াবাসহ নানা প্রকার মাদকের ব্যবসা করে কোটিপতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।কয়েক মাস যাবত মাদক কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সম্প্রতি এই মাদক চোরাকারবারীরা বেশ তৎপর হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী পুলিশ সুপার (কালিগঞ্জ সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দীন বলেন, মাদক যেসব এলাকা দিয়ে আসে আমরা তাদের ধরার ব্যাপারে সব সময় তৎপর থাকি । এব্যাপারে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স । অনেক সময় শিশু এবং গরিবদের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে মাদক ব্যবসায়ীরা । তবে বি জি বি ও পুলিশ যৌথ উদ্যোগে এ গুলি কমিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে ।
Please follow and like us: