আশাশুনিতে বন্দোবস্ত বাতিল হলেও শ্মশানের জমিতে নির্মাণ কাজ করার অভিযোগ
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি:
আশাশুনি উপজেলার খরিয়াটিতে দীর্ঘকালের শ্মশান ঘাটের জমি দখল নিয়ে নির্মান কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ এবং এলাকার শত শত হিন্দু-মুসলিম ব্যক্তি জানান, খরিয়াটি মধ্যম পাড়ায় দীর্ঘ অর্ধ শতাধিক বছরের পুরনো শ্মশান ঘাটটিতে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ শেষ কৃত্য ও সমাধির কাজ করে থাকে। সেখানে শ্মশান ঘাটের পাশাপাশি অনেকগুলো সমাধি বিদ্যমান। সাবেক এমপি মোখলেছুর রহমানের আমলে সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্ত হয়ে সেখানে একটি পুকুর খনন করে মাটি দিয়ে শ্মশানটি ভরাট দিয়ে ব্যবহারের জায়গা বিন্যস্ত করা হয়। মাটির বাঁধ ও ঘেরা দিয়ে শ্মশানের সীমানা নির্ধারিত ছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মৃত ব্যক্তিদের শেষ কৃত্য করে আসছিল। কিন্তু ভূমি অফিস ভ্রমাত্মক ভাবে একই গ্রামের জিন্নাত সরদারের পুত্র ইনামুলকে ৩০ শতক এবং ইনামুলের পিতাকে ৩০ শতক জমি বন্দোবস্ত প্রদান করে। একই পরিবারের দু’জনকে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়, আবার ইনামুলকে যে বন্দোবস্ত (কেস নং-৩১৩/২০১৫-১৬, জেঃপ্রঃ) দেওয়া হয় তাতে ১৯ শতক জমি শ্মশানের ছিল। বন্দোবস্ত পাওয়ার পর তারা শ্মশানের জমিতে ঢুকে ঘেরাবেড়া ও বাঁধ কেটে জবর দখল শুরু করেন। এনিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে পুনরায় মাপজরিপ শেষে প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি ২৮/৮/১৭ তারিখের সভায় শ্মশানের জমি বন্দোবস্ত বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করে। জেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি ২৬/১১/১৭ তাং সভায় উক্ত বন্দোবস্ত দেওয়া ৩০ শতক জমির মধ্যে ১৯ শতক খাস জমি শ্মশানের জমি হওয়ায় আংশিক বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। শ্মশানের জমি বাতিল করা হয়েছে জানতে পেরে জিন্œাত শ্মশানের জমিতে ইটের গাথুনি দিয়ে একটি ঘর উঠিয়ে দেন এবং পরবর্তীতে একটি সমাধির ধার দিয়ে মসজিদের আকৃতিতে আরও একটি ঘর নির্মানের উদ্দেশ্যে ৭/৮ সারির ইটের গাথুনি সম্পন্ন করেন। এলাকার মানুষ প্রতিবাদ মুখর হয়ে সেখানে গিয়ে কিছু ইট খুলে ফেলেন। গতকাল (শুক্রবার) এলাকার ইউপি সদস্য ও শত শত মানুষের সামনে জিন্নাত মোবাইলে অজ্ঞাত কারো সাথে কথা বলতে বলতে যে কোন একজনকে ফেলে দেবে (হত্যা করবে) বলে আস্ফালন করতে থাকে। এতে উপস্থিত মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়। শ্মশানের উত্তর সীমানার জমির মালিক আঃ গফফার জানান, শ্মশান কমিটি সরকারি বরাদ্দ পেয়ে পুকুর কেটে পাশের জমি ভরাট দিয়ে শ্মশানটি সুন্দর করে। আমি পুকুরটি লীজ নিয়ে মাছ চাষ করেছি। ৫০ বছরের পুরনো শ্মশানটি অবৈধ দখল নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মিরাজ আলি জানান, পরিষদের সকল সদস্য শ্মশানের জমি অবৈধ দখলের প্রতিকারের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে এলাকায় রক্তক্ষয়ি অবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে আতঙ্ক প্রকাশ করেন তিনি। এসআই আঃ রাজ্জাক ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন।
Please follow and like us: