প্রাইভেট না পড়ার জেরে ফলাফলে পিছিয়ে

শ্যামনগর প্রতিনিধি:
প্রধান শিক্ষকের সাফ কথা “বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়লে নম্বর বেশী মিলবে”। নির্দেশনার বাইরে যেয়ে অন্যদের কাছে প্রাইভেট পড়া শিশুদের দায়িত্ব তিনি নিবেন না।
যেমন কথা তেমন কাজ। প্রধান শিক্ষক ঠিকই প্রমান করেছেন নিজ উক্তির যথার্থতা। তার কথা ও কাজের এমন মিলের কারনে বেশ কয়েক শিশু সদ্য প্রকাশিত বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে পিছিয়ে পড়েছে। এমন অভিযোগ ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর সজনী, ইব্রাহিম, জামিলা এবং চতৃর্থ শ্রেনীর বেলাল, অপু, তুহিনসহ আরও কয়েক শিশুর অভিভাবকের।
এসব অভিভাবকের দাবি প্রধান শিক্ষকের কথা মেনে ওই বিদালয়ের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ার জেরে তাদের সন্তানদের পরীক্ষার খাতায় নম্বর কমিয়ে দেয়া হয়েছে। বিপরীতে ঐসব শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শিশুদের খাতার নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় ভাল ফলাফলে সহায়তা করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তারা নিজ সন্তানদের বিকল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাবেন বলেও জানান।
এমন অভিযোগ শ্যামনগর উপজেলার ১১৬ নং হাওয়ালভাঙী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুপেন্দ্রনাথ মিস্ত্রির বিরুদ্ধে। যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক তা অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক বলেছেন কিছু শিশুর অভিভাবক অজ্ঞাত কারনে টিসি নিয়ে গেছেন।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী সজনীর মাতা রুবিনা রুপা জানান, প্রধান শিক্ষক ভুপেন্দ্রনাথ মিস্ত্রি ও সহকারী শিক্ষিকা অঞ্জু রানী মিস্ত্রি শিশুদের প্রাইভেট পড়ান। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার বাইরে তারা ‘প্রাইভেট প্রাকটিস’ এর সাথে জড়িত থাকার কারনে একই প্রতিষ্ঠানের শিশুদের তাদের কাছে প্রাইভেট পড়ার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা থাকে। তার নির্দেশ না মেনে বাইরে প্রাইভেট পড়লে পরীক্ষার খাতায় নম্বর কমিয়ে দেয়া হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী আছিয়া আক্তার হিরার পিতা মোঃ আলাউদ্দীন জানান, প্রধান শিক্ষক ভুপেন্দ্রনাথ মিস্ত্রি বছরের শুরুতে জানিয়ে দেন যে তাদের দুই জনের কাছে প্রাইভেট না পড়লে নম্বরের গ্যারান্টী দেয়া হবে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন তাদের কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারনে এবারের বার্ষিক পরীক্ষায় তিনিসহ আরও কয়েক অভিভাকের সন্তানদের নম্বর কমিয়ে দেয়া হয়েছে। একইভাবে যারা প্রাইভেট পড়েছে তাদের নম্বর বাড়িয়ে ভাল ফরাফল করতে সাহায্য করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি তার সন্তানকে নলতলা বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছেন।
অভিন্ন অভিযোগ চতুর্থ শ্রেনীর বেলাল হোসেন সোহেলের অভিভাবক মোর্তজা খোকন, অপুর পিতা লাভলু, তৃতীয় শ্রেনীর ইব্রাহিমের পিতা সালাউদ্দীননহ আরও অনেকের।
তাদের অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মেনে তিনিসহ সহকারী শিক্ষকা অঞ্জু মিস্ত্রির কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় সন্তানদের নম্বর কমিয়ে দেয়া হয়। তাদের এমন আচারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ইতিমধ্যে এসব অভিভাবক নিজেদের সন্তানদের অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছেন। তারা আরও জানান বিষয়টি আমলে নিয়ে কতৃপক্ষ তদন্ত করলে তাদের অভিযোগের যথার্থতার প্রমান মিলবে। তারা দাবি করেন প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মেনে তিনিসহ অঞ্জু মিস্ত্রির কাছে প্রাইভেট না পড়লে সব সন্তানদের অভিন্ন পরিনতির শিকার হতে হবে। তাই বাকি শিশুদের সাথে এমন আচারণ বন্ধ করার অংশ হিসেবে হলেও তারা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।
এদিকে এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ভুপেন্দ্রনাথ মিস্ত্রি বলেন প্রাইভেট না পড়ায় নম্বর কমিয়ে দেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তবে আট জন অভিভাবক তাদের সন্তানদের অন্র বিদালয় নিয়ে গেছেন। কি কারনে নিয়ে গেছেন তা তিনি জানে না বলেও দাবি করেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)