মুক্তিযোদ্ধার ঘর ভেঙেছে শুনেই ছুটে গেলেন মেরিনা আক্তার
বিশেষ প্রতিনিধি:
মুক্তযোদ্ধার নির্মনাধীন একটি ঘর ভাঙার খবর শুনেই ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সাতক্ষীরা সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার। মঙ্গলবার সন্ধার পরপরই সাতক্ষীরা সদরের শিবপুর ইউনিয়নের তেতুলতলা এলাকার মৃত গোলবাহার সরদার মুক্তিযোদ্ধা জালালউদ্দীনের বাড়িতে যেয়ে ঘটনা শোনেন এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দীন বলেন, জমিক্রয় করে আমি ৪ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। আমার জমিরসাথে রাস্তার ধারের ৩ কাঠা খাসজমি আছে। ঐ জমিতে গর্ত ছিল। আমি অনেক টাকা খরচ করে ঐ গর্ত ভরাট করেছি। সেখানে ৮টা নারকেল গাছ লাগিয়েছি। কয়েকদিন আগে ঐ জমিতে একটি ছোট ঘরও বানিয়েছিলাম। এখন ঐ জমি দখল করার জন্য শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল্লার ছেলে সামছুজ্জামান ও মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ওয়ালিউল্লাহ বিভিন্ন সময় আমার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে। আজ(মঙ্গলবার) দুপুরে আমরা কেউ বাড়ি না থাকার সুযোগে সামছুজ্জামান, মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ, ওয়ালিউল্লাহর ভাই মাওলানা আঃ রহমান, লুৎফর রহমান ও ওয়ালউল্লাহর ছেলে আমিমুল সদর থানার এস আই মোমরেজকে সাথে নিয়ে এসে ঘরের ছাউনি অ্যালবেস্টারগুলো বাঁশ দিয়ে ভেঙে ফেলে এবং ঘরের বেড়া ও ঐ জমিতে লাগানো নারকেল গাছগুলো উপড়ে পানিতে ফেলে দেয়।
মুক্তিযোদ্ধা আরো বলেন, কয়েক মাস আগেও দারোগা মোমরেজ আমার বাড়িতে এসে আমাকে গালিগালাজ করেছিল। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। সাতক্ষীরায় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ৬৭৭ নং সিরিয়ালে আমার নাম আছে। কিন্তু দারোগা বলে আমি নাকি মুক্তিযোদ্ধা না। এছাড়া সে আমাকে ভয় দেখিয়ে ওই সময় দুই হাজার টাকাও নিয়েছিল।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জবেদা খাতুন বলেন, দারোগার সামনেই আমাদের ঘরটি বেঙে দিল। আমি বারবার বললাম বাবা আলবেস্টারগুলো যেন না ভাঙে, তুমি একটু বলো কিন্তু দারাগা ওদেও কিছুই বললো না। সন্ধার আগে ঘটনাটি শুনেই মহিলা পুলিশ (মেরিনা আক্তার) এসে আমাদের গাছ উপড়ানো ও ভাংচুর করা ঘর দেখে গিয়েছেন। আগামী কালই আমাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা তিনি করে দিবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া ভবিষৎ এ আর কোন ঝামেলা হবেনা, হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আমাদের বলেছেন।
সদর থানার এস আই মোমরেজ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যাদের জমিতে ঘর বানিয়েছে তারা ভেঙে দিয়েছে। আমি না থাকলে সবই ভেঙে দিতো। তারপরও যারা ভেঙে দিয়েছে তাদের বলেছি যে ঘর ঠিক করার জন্য টিনসহ যা লাগে সবই দিতে হবে । যদি না দাও তবে তোমাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
এ ছাড়া গালিগালাজ ও টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরো বলেন, আমি ওনাকে গালিগালাজ করিনি এবং ওনার কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি।
এ ব্যাপারে মাওঃ ওয়ালিউল্লাহ বলেন, আমাদেও জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা হয়েছে। তাই ওপাসের জমি আমাদের। আমাদের জায়গায় ঘর বানিয়েছে তাই আমরা ভেঙে দিয়েছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সাতক্ষীরা সদর সার্কেল)মেরিনা আক্তার বলেন, ঘর ভাঙার কথা শুনেই আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক সাতক্ষীরা/জেড এইচ
Please follow and like us: