কালিগঞ্জে শ্রমিক নেতা বাবু হত্যা মামলার অভিযোগ গঠণ ২৫ জুলাই

কালিগঞ্জ উপজেলার কাঁকশিয়ালী গ্রামের পরিবহন শ্রমিক নেতা রাজু আহম্মেদ বাবু হত্যা মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে আগামি ২৫ জুলাই অভিযোগ গঠণের দিন ধার্য করা হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুর রহমনার তালুকদার এ দিন ধার্য করেন।
এদিকে একই ঘটনায় পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার পাশাপাশি নিহতের মায়ের আদালতে দায়েরকৃত মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়ায় আইনের ফাঁক ফোকড় দিয়ে মূল আসামীরা বিচার ব্যবস্থাকে বিলম্বিত করতে পারেন বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কালিগঞ্জ বাস টার্মিনালে একাংশ শ্রমিকদের হামলায় শ্রমিক নেতা রাজু আহম্মেদ বাবু মারা যান। আহত হন তার দু’ সহযোগি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজুর ও আব্দুর রহিম। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে পুলিশ তা নেয়নি। উপপরিদর্শক হেকমত আলী বাদি হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে পরদিন থানায় একটি হত্যা মামলা (থানা মামলা নং- ৬৭/১৬) দায়ের করেন। মামলায় সুরতহাল প্রতিবেদনে স্বাক্ষরিত চারজনকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক অমল কুমার রায় ওই বছরের ২০ জুন ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এদিকে মামলায় নিরীহ লোকজনদের আসামী করা হয়েছে বিষয়টি জানতে পেরে নিহতের মা রহিমা খাতুন বাদি হয়ে ২০১৬ সালের ৫ মে সাতক্ষীরার আমলী আদালত-২ এ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচারক ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম হাবিবুল্লাহ মাহমুদ বাদিসহ সাতজনের জবানবন্দি গ্রহণের পর তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি ১৯জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশ দেন। বাদি ব্যতীত অপর ছয়জন সাক্ষী পুলিশের দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত আসামী করা হয়েছে। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়া ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকির অভিযোগ এনে নিহতের মা রহিমা খাতুন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পুলিশের দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে ২৮ জনের মধ্যে তাহের, শাহীন ও বাবলা ব্যতীত ২৫জনই নিরাপরাধ। বিচার বিভাগীয় তদন্তে যে ১৯ জন আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয় তাদের মধ্যে ১৬জনই পুলিশের দায়েরকৃত মামলার আসামী। অথচ ১৬ জনের মধ্যে তিন জনকে রেখে বাকী ১৩জনকে পুলিশ প্রতিবেদনে বাদ দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৬ মে মামলার তদন্তভার সিআইডিতে পাঠানোর জন্য কালিগঞ্জ থানায় চিঠি পাঠানো হলে পরদিন এক চিঠিতে জানানো হয় যে মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র আদালতে পাঠানো হয়েছে। যদিও ওই বছরের ২০ জুন আদালতে অভিযোগপত্রটি পেয়েছেন মর্মে একজন বিচারক স্বাক্ষর করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এড. লুৎফর রহমান বলেন, একই বিষয়ের উর দু’টি মামলা হওয়ায় দু’টি নথি একসঙ্গে বিচারের জন্য আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে জিআর মামলাটির কার্যক্রম বিচারিক আদালতে রয়ে গেছে। বিচার বিভাগীয় তদন্তের পর সিআর মামলাটি সেশন মামলায় রুপান্তরিত হয়ে (৮৬/১৮ নং) আগামি ২৫ জুলাই অভিযোগ গঠণের জন্য দিন আছে। একই মামলা দু’টি আদালতে বিচারাধীন থাকলে আইনি জটিলতায় অনেকেই উচ্চ আদালতে ফয়দা লুটতে পারেন। সেকারণে বিলম্বিত হতে পারে মামলার রায়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)