উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত

আব্দুর রশিদ বাচ্চুঃ
উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর ২০২১) সকাল ১১টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।  উদ্বোধন শেষে উপাচার্যের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে কটকা স্মৃতিস্তম্ভের সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পাশ ঘুরে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন হয়ে পুনরায় হাদী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যারা নানাভাবে অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এটি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের সামনে শুধু আকাশ। আমরা এখন আকাশ  ছুঁতে চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনায় আমরা দেশে-বিদেশে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই। উপাচার্য বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্মিলিতভাবে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সমৃদ্ধির এ সম্মুখযাত্রায় বর্তমান ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় তার অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অর্জন ও সুদৃঢ়ভিত্তি রচিত হয়েছে তা আগামী দিনের সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শোভাযাত্রায় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ডিনবৃন্দ, ডিসিপ্লিন প্রধানবৃন্দ, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টসহ বিভাগীয় প্রধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  বেলা ১২টায় উপাচার্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সংস্কারকৃত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করেন। পরে তিনি হলের সামনে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজে বঙ্গবন্ধুর রোপণকৃত নারকেল গাছে উৎপাদিত নারকেল থেকে তৈরি চারা রোপণ করেন। এরপর তিনি খানজাহান আলী হলের সামনে স্মারক বৃক্ষরোপণ করেন।
এছাড়া বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বেলা সাড়ে ১২টায় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিকাল সাড়ে ৩টায় মুক্তমঞ্চে বিভাগ/ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপন, বিকাল ৪.২০ মিনিটে বিগত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনমূহকে সম্মাননা প্রদান। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসের মেইন গেট, রাস্তা, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, ক্যাফেটেরিয়া, একাডেমিক ভবন ও হলসমূহ আলোকসজ্জা করা হয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৯০’ পাস হয়, যা গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ওই বছর ৩১ জুলাই। এরপর ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লি¬নে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট প্রথম ওরিয়েন্টেশন এবং ৩১ আগস্ট ক্লাস শুরুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষাকার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়। ৩১তম শিক্ষাবর্ষে এখন ডিসিপ্লিনের সংখ্যা ২৯টি এবং শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাত হাজার।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)