স্বামী কাটলেন আঙুল, বসা হলো না পরীক্ষায়

নিউজ ডেস্ক:

দীর্ঘ দেড় বছর পর শুরু হলো এসএসসি-সমমান পরীক্ষা। মাধ্যমিকের এ পরীক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সুমাইয়া আক্তার। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু স্বামীর বটির কোপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ডান হাতে আঙুল। রোববার পরীক্ষার হলে থাকার কথা থাকলেও হাসপাতালের বিছানায় রয়েছেন এ কিশোরী। দিতে পারছেন না এসএসসি পরীক্ষা।

সুমাইয়ার বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া এলাকায়। তিনি একই এলাকার খাইরুল ইসলামের মেয়ে। প্রায় সাত মাস আগে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের আমড়াতৈল গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সাইফুল দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিলেন।

ভুক্তভোগী সুমাইয়ার স্বজনরা জানান, এক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসার পর বাবার সঙ্গে আর্থিক বিষয়ে সাইফুলের দ্বন্দ্ব চলছিল। পরে গত রোববার শ্বশুরবাড়িতে আসেন সাইফুল। মূলত পরিবারের খরচ চালাতে না পারার হতাশা থেকেই তিনি কুপিয়েছেন। শুক্রবার ভোরে সুমাইয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে কোপাতে থাকেন সাইফুল। আত্মরক্ষা করতে গিয়ে সুমাইয়ার ডান হাতের আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়। চিৎকার শুনে মা ও বোন এগিয়ে গেলে সাইফুল তাদেরও কুপিয়ে আহত করেন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সুমাইয়ার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।

গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুত্ফর রহমান বলেন, সুমাইয়া পরীক্ষা দিতে পারবেন না। স্বামীর বটির আঘাতে ডান হাতের আঙুল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সুমাইয়া মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসাধীন সুমাইয়া বলেন, আমার সহপাঠীরা সবাই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আমার মা কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছেন। কিন্তু পরীক্ষা দিতে পারব না।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজুর রহমান জানান, কোনো পরীক্ষার্থী সিক বেডে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেনি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)