রেকর্ডময় ম্যাচে বড় জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

টি-২০ বিশ্বকাপে মনে রাখার মতো একটা ম্যাচ খেললো বাংলাদেশ। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই বেশ কিছু রেকর্ড গড়ে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বড় জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। একই সঙ্গে প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে সুপার টুয়েলভ পর্ব।

ওমানের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে হারিয়ে ১৮১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় পিএনজি। টি-২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি ২৩তম সর্বনিম্ন স্কোর। টাইগারদের জয় ৮৪ রানে।

এতদিন টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ১৮০। ২০১৬ বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে করা সেই রেকর্ড আজ পেরিয়ে যায় টাইগাররা।

এছাড়া জয়ের দিক থেকে এতদিন লাল সবুজদের সর্বোচ্চ ব্যবধান ছিল ৫৪ রান। সেটিও আজ ভেঙেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। একইসঙ্গে টি-২০ ফরম্যাটেও এটা বাংলাদেশের বৃহত্তম জয়। এছাড়া জয়ের দিক থেকে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটি ষষ্ঠ বৃহত্তম জয়।

সুপার টুয়েলভ পর্ব নিশ্চিত হলেও বাংলাদেশ কোন গ্রুপে পড়বে তা এখনো নিশ্চিত নয়। দিনের শেষ ম্যাচ অর্থাৎ স্কটল্যান্ড ও ওমানের ম্যাচ শেষেই এটি নিশ্চিত জানা যাবে।

বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে পিএনজির হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন আসাদ ভালা ও লেগা সিয়াকা। শুরুতেই আঘাত হানেন সাইফউদ্দিন। লেগ বিফোরের ফাঁদে পরে ৫ রানে বিদায় নেন সিয়াকা। এরপরের ওভারে তাসকিনের আঘাত। নিজেদের দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই পিএনজি অধিনায়ক আসাদ ভালাকে সাজঘরে ফেরান এই পেসার।

পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে আসেন সাকিব আল হাসান। এসেই ১ রান করা চার্লস আমিনির উইকেট শিকার করেন তিনি। একই ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই ফেরান সাইমন আতাইকে।

টাইগার বোলারদের তোপে মাত্র ২৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে পিএনজি। এরপর ১১ রানের ইনিংস খেলে বিপর্যয় সামাল দেন চাঁদ সোপার। শেষদিকে কিপলিন ডোরিগার অপরাজিত ৪৬ রানের ইনিংস শুধু পিএনজির হারের ব্যবধান কমিয়েছে।

এদিন বল হাতে বিধ্বংসী ছিলেন সাকিব আল হাসান। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। এর মাধ্যমে ৩৯ উইকেট নিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন এই অলরাউন্ডার। এছাড়া সাইফউদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ দুটি এবং মাহেদী শেখ একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ ওমানের বিপক্ষে যারা ছিলেন, তারাই এ ম্যাচেও খেলছেন।

দলের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নাইম শেখ ও লিটন দাস। প্রথম বলেই অল্পের জন্য বেঁচে যান নাইম। কিন্তু এ থেকে শিক্ষা নেননি তিনি। পরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সোজা ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ফেরেন শূন্য রানে।

শুরুতেই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও লিটন। দুজনে মিলে গড়েন ৫০ রানের জুটি। এরপরই সাজঘরে ফেরেন লিটন। বাজে শটে আউট হওয়ার আগে এ ব্যাটসম্যান করেন ২৯ রান।

ব্যাডপ্যাচ থেকে এ ম্যাচেও বেরোতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। তিনি ৫ রানে আউট হন। অন্যপ্রান্তে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে আসাদ ভালার প্রতি অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।

সাজঘরে ফেরার আগে ৪৬ রান করেন সাকিব। তার বিদায়ের পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন রিয়াদ। মাত্র ২৭ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। যা বিশ্বকাপের চলতি আসরে দ্রুততম। তবে পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি।

শেষ দিকে আফিফ হোসেনের ২১ ও সাইফউদ্দিনের অপরাজিত ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংসে বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। পাপুয়া নিউ গিনির হয়ে দুটি করে উইকেট নেন কাবু মোরিয়া, ড্যামিয়েন রাভু ও আসাদ ভালা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)