কুমিরটি উদ্ধারের চেষ্টা ব্যর্থ, আতঙ্কে এলাকাবাসী

অনলাইন ডেস্ক :

ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকায় জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের একটি খালে বিরল প্রজাতির মিঠা পানির যে কুমিরটি আস্তানা গেড়েছে সেটি উদ্ধারের জন্য শুক্রবার দ্বিতীয় দফা অভিযান চালনো হয়। তিন দফা জালে আটকা পরলেও প্রতিবারই জাল ছিড়ে বের হয়ে যায় কুমিরটি।

জলাশয়টিতে গত ২৪ জুলাই থেকে কুমিরটি অবস্থান করছে। ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই দফা ব্যর্থ অভিযানের পর তারা ভয়ে ও আতংকে আছেন।

শুক্রবার কুমির উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ উদ্ধার অভিযানের প্রধান বন্য প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, দ্বিতীয় দফায় উদ্ধার অভিযান সফল না হওয়ায় আপাতত উদ্ধার অভিযান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পানি কমলে এ উদ্ধার অভিযান আবার চালানো হবে।

তিনি বলেন, বর্ষার পানিতে ওই ক্যানেল তলিয়ে গেলে কুমিরটি স্বেচ্ছায় নদীতে বের হয়ে গেলে আর উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার প্রয়োজন হবে না। উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি সচেতনতামূলক সভা করা হয়। গ্রামবাসীকে কুমিরটিকে বিরক্ত না করতে বলা হয়েছে। কুমিরটিকে কেউ বিরক্ত না করলে কুমির কারো ক্ষতি করবে না।

কুমির উদ্ধার অভিযান দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ওয়াফিজ মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন বিশ্বাস (৬২) বলেন, তিনি এক হাজার ৪০০ হাত লম্বা ও ৩২ হাত চওড়া একটি জাল এবং অপর জেলে মীর মালতের ডাঙ্গী গ্রামের চানু মোল্লা (৫৪) চার হাজার হাত লম্বা ও ২০ হাত চওড়া এই দুটি জাল দিয়ে কয়েকবার কুমিরটি ধরার চেষ্টা করেন। বিকেল তিনটা, সাড়ে তিনটা ও পাঁচটার দিকে তিন দফা কুমিরটি জালে আটকা পড়ে, কিন্তু প্রতিবারই জাল ছিড়ে বের হয়ে গেছে। যতটা ধারণা করা হয়েছেল (১০ ফুট) কুমিরটি তার চেয়েও বড়।

গত বুধবার কুমিরটি উদ্ধারের জন্য প্রথম চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা করেও কুমিরটি ধরা সম্ভব হয়নি। যে জলাধারে কুমিরটি আস্তানা গেড়েছে সেটি এলাকাবাসীর কাছে ফালুর খাল হিসেবে পরিচিত। এ জলাধারের দৈর্ঘ্য আনুমানিক এক হাজার মিটার ও প্রস্থ ৭৫ থেকে ১০০ মিটার। এলাকাভেদে এ জলাধারের গভীরতা ৫ মিটার থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত।

গত ২৪ জুলাই ওই কুমিরটিকে প্রথম জলাধারে দেখেন এলাকাবাসী। এরপর ওই এলাকায় মাইকিং করে সর্বসাধারণকে ওই জলাশয়ে না নামার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, কুমিরটির ধরার জন্য গত বুধ ও শুক্রবার দুটি অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মনে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। কুমিরটি ধরে এলাকাবাসীর ভয় দূর করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা সফল হতে পারিনি। তবে কুমিরটিকে যাতে এলাকাবাসীর ক্ষতি না করে, সে বিষয়ে স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলেছি। একই সাথে কুমুরের আক্রমণে কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে এলাকা জুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। আপাতত ওই জলাশয় ব্যবহার না করার জন্য স্থানীয় জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)