শেষ মুহূর্তের গোলে পয়েন্ট খোয়াল আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস ডেস্ক:

কথায় আছে, উঠন্তি মুলো নাকি পত্তনেই চেনা যায়। আর্জেন্টিনার মুলোকে চেনা গেল কই? আলবিসেলেস্তেরা দুই গোলে এগিয়ে গেল শুরুর দশ মিনিটেই, পেল দুর্দান্ত শুরু। এরপর খেলার শেষ অর্ধে দুই গোল হজম, ২-২ গোলে ড্র। তাতে চিলির পর কলম্বিয়ার বিপক্ষেও এগিয়ে গিয়ে পয়েন্ট খোয়ালেন লিওনেল মেসিরা।

অথচ শুরুটা কি দুর্দান্তই না হয়েছিল আর্জেন্টিনার! কলম্বিয়ার এস্তাদিও মেত্রোপলিতানোয় বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটিতে দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যরা। ডান প্রান্ত থেকে ফ্রি কিকে দারুণভাবে মাথা ছোঁয়ান ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, তাতেই এগিয়ে যায় আলবিসেলেস্তেরা। আগের ম্যাচে অভিষেকে দারুণ সব রক্ষণাত্মক কারিকুরিতে নজর কেড়েছিলেন। আজ পেয়ে গেলেন প্রথম আন্তর্জাতিক গোলও।

আর্জেন্টিনা থামেনি সেখানেই। এর মিনিট ছয়েক পর আবারও গোল। এবার মেসির কর্নার থেকে বল ফেরালেও পুরোপুরি প্রতিহত করতে পারেননি কলম্বিয়ান ডিফেন্ডাররা। ফিরতি বলে কয়েকদফা পজেশন অদল বদল হলো, শেষমেশ গিয়ে পড়ল লিয়ান্দ্রো পারেদেসের পায়ে। রক্ষণে থাকা চারজনকে কাটিয়ে দারুণ এক গোল করেন তিনি, আলবিসেলেস্তেদের ব্যবধান দ্বিগুণ হয় তাতে।

এরপরই যেন কিছুটা ছন্দপতন। শুরুর দশ মিনিটে দারুণ খেলা আর্জেন্টিনা যেন এর পর থেকেই খেলেছে রক্ষণের মানসিকতা নিয়ে। তাতে গোলের সুযোগও কমতে থাকে পাল্লা দিয়ে।

তবু সুযোগ এসেছিল ২৭ মিনিটে। জিওভানি লো সেলসোর পাস থেকে লাওতারো মার্টিনেজের করা শট ঠেকান কলম্বিয়া গোলরক্ষক দাভিদ অসপিনা। ফিরতি চেষ্টায় নিকো গঞ্জালেস কেবল পাশের জালই কাঁপাতে পেরেছেন।

ম্যাচে আর্জেন্টিনার সুখস্মৃতি এ পর্যন্তই। ৩৪ মিনিটে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ উঠে গেলেন চোট পেয়ে। বলের দখল নিতে গিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনার সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তার, তাতে চোট পান মুখে। মাঠেই বেশ কিছুক্ষণ চিকিৎসা চলেছেন তার। শেষমেশ মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে।

এমি গেলেন, সঙ্গে যেন নিয়ে গেলেন আর্জেন্টিনার সৌভাগ্যটাও। নাহয় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বক্সে আগুয়ান মাতেয়াস উরিবেকে কেন অহেতুক ফাউল করে বসবেন নিকলাস অটামেন্ডি? পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান লুইস মুরিয়েল। তার অবদান অবশ্য এখানেই শেষ নয়। সময় যত গড়িয়েছে এরপর, ক্রমেই আর্জেন্টিনা রক্ষণে আক্রমণ বেড়েছে তার।

আরও একটা গোল করে ম্যাচটা বের করে নিতে আর্জেন্টিনাও চেষ্টা করেছে বেশ। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি সেসব আক্রমণ। ৫৮ আর ৮৪ মিনিটে দুবার মেসিকে গোলের মুখ থেকে ফেরান অসপিনা।

গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারার ব্যর্থতা শেষ সময়ে এসে কাল হয়ে দাঁড়ায় মেসিদের। রক্ষণের ভুলে দলটি গোল হজম করে একেবারে ম্যাচের শেষ মিনিটে। হুয়ান কুয়াদ্রাদোর ক্রস থেকে দারুণ এক হেড করেছিলেন বোরহা। বদলি গোলরক্ষক অগাস্তিন মার্চেসিন তা আয়ত্ব রাখতে পারেননি, তার হাত ফসকে বল গিয়ে জড়ায় জালে।

ফলে ২-২ ড্রয়ে বাধ্য হতে হয়েছে মেসিদের। বাছাইপর্বে এটি তাদের তৃতীয় ড্র। এর ফলে ৬ ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট অর্জন করেছেন মেসিরা। আপাতত আছেন কনমেবল অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় অবস্থানে। তবে কোপা আমেরিকার ঠিক আগে টানা দুই ম্যাচে এভাবে এগিয়ে গিয়েও শেষে গোল হজম করে ড্র কোচ স্ক্যালোনিকে রাখবে বেশ দুশ্চিন্তাতেই।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)