সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির কারণে ব্যবসায়িদের আজ দুর্ভোগ

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দের অভিযোগ
নিজস্ব  প্রতিনিধিঃ
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনা অনুযায়ি সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তরিত হয়। সে অনুযায়ি বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কিন্তু ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির কারনে বন্দরটির কার্যক্রম সুবিধার পরিবর্তে দুর্ভোগের কারণ হয়ে এ অঞ্চলের ব্যবসায়িদের গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে।

আজ রবিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোমরা স্থলবন্দর আমদানী ও রপ্তানীকারক এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবন্দ এই অভিযোগ করে ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের (ভোমরা স্থলবন্দর আমদানী ও রপ্তানীকারক এ্যাসোসিয়েশন) সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু হাসান বলেন, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরটি বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এই বন্দর থেকে সরকার প্রতিবছর শুধু কাস্টমস্ ডিউটি বাবদ ১২শ’ কোটি টাকা আয় করে থাকে। ভোমরা স্থলবন্দরে প্রত্যক্ষভাবে ৫০ হাজার
মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু আজ এই বন্দরটি কঠিন সংকটের মধ্যে অবস্থান করছে। ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা ব্যবসায়িরা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও প্রতারনার শিকার হচ্ছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার দেশের অন্যান্য স্থল বন্দরের ন্যায় ভোমরা স্থল বন্দরটিতেও পণ্য খালাসে লেবার সরবরাহের জন্য একজন ঠিকাদার নিয়োগ করে।থাকে। নিয়ম অনুযায়ি লেবার সরবরাহের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ পার মেট্রিক টন।হিসাবে ৬৯.২০ টাকা হারে ব্যবসায়িদের কাছ থেকে বিল নিয়ে থাকে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পণ্য খালাসের জন্য আমাদের লেবার সরবরাহ না করে বন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রতিমাসে কোটি।কোটি টাকা।হাতিয়ে নিচ্ছে। উপায়ন্ত না পেয়ে আমরা আমদানীকারকগণ বাইরের লেবার সংগ্রহ করে ট্রাক প্রতি দুই হাজার টাকা দিয়ে পণ্য খালাস করাছি। ফলে পণ্য খালাসে
আমারা দুই বার লেবার বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছি। বিভিন্ন সময়ে এর প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার  পাইনি।

মোঃ আবু হাসান আরো বলেন, গত ৩ মার্চ বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে আমাদেরকে অবগত করেন যে, ১ এপ্রিল থেকে ডাবল লেবার বিল কার্যকর করা হবে। এউপলক্ষে গত ২৩ মার্চ বাংলাদেশ স্থলবন্দর কৃর্তপক্ষের সচিবের উপস্থিতিতে ও বন্দরের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে একটি কার্যকরী সভা
অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিষয়টি মিমাংশ না হওয়া পর্যন্ত চালু না করার জন্য
সচিব, জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন। তাছাড়া ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার জন্য লিখিত ভাবে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও উপ পরিচালক তাদের নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে জোর
পূর্বক ডাবল বিল চালু করতে যাচ্ছেন। এটি চালু হলে প্রতি ট্রাকে শুধুমাত্র লেবার সংক্রান্ত ব্যয় হবে ১০ হাজার ৯২০ টাকা। যা বাংলাদেশের আর কোন বন্দরে পরিলক্ষিত হয় না। এটি আবার প্রতিবছর ৫শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে। এমন পরিস্থিতিতে ডাবল লেবার বিল চালু করে ভোমরা বন্দরকে ধ্বংস করার পায়তার
করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছে। কিন্তু কিছু সরকার বিরোধী দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা সরকারকে তার সফলতায় পৌছাতে না দিয়ে সুকৌশলে প্রতি মাসে ব্যবসায়িদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র সম্ভাবনাময় ভোমরা স্থলবন্দরটিকে হুমকির
মুখে ফেলে দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে এই বন্দরের ব্যবসয়িরা টিকে থাকতে পারবে না। ফলে বন্দরটি অকার্যকর বন্দরে পরিনত হবে। তিনি দেশের অন্যান্য সব বন্দরের ন্যায় সুযোগ সুবিধা দাবি করে এবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরাফাত হোসেন ও  সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিমসহ আমদানী ও রপ্তানীকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)