কলারোয়ায় একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যা- আদালতে তিন পুলিশ কনস্টেবলের সাক্ষ্য গ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের
খলিসা গ্রামে একই পরিবারের দু’ নাবালক সন্তানসহ তাদের বাবা ও মাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন লাশ
বহনকারি তিন সাক্ষী।

আজ বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করে ২৩ ফেব্র“য়ারি পরবর্তী সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেছেন। এ নিয়ে এ মামলায় ১১জন সাক্ষী দিলেন। সাক্ষ্য দাতারা হলেন, কনস্টেবল সোনিয়া আক্তার, কনস্টেবল মোঃ বখতিয়ার হোসেন ও কনস্টেবল সিরাজুম মনীর।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান(৩৬)
বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে সে খাওয়া দাওয়া করতো।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি স্ত্রী তালাক দেয় রায়হানুর রহমানকে। সংসারে টাকা দিতে না পারায়
শাহীনুৃরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো।

এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই মোঃ শাহীনুর রহমান(৪০) ভাবী সাবিনা খাতুন(৩০), তাদের ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যূালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী(১০) ও মেয়ে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে(৮) কোমল পানীয় এর সাথে ঘুমের বাড়ি খাওয়ায়। পরদিন ১৫ অক্টোবর ভোর চারটার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

হত্যাকারীরা ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শ্বাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদি হয়ে কারো নাম উলে-খ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি সন্দিগ্ধ আসামী
হিসেবে শাহীনুরের ভাইর রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত রায়হানুরকে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মণ্ডলের কাছে একাই হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা
খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান আসামী রায়হানুর রহমানের নাম উলে-খ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে এ মামলায় ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠণের পর বাদি ময়না খাতুন আদালতে
সাক্ষ্য দেন।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ বলেন, এ পর্যন্ত মামলার বাদি ময়না খাতুন, কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক ইসরাফিল
হোসেন, তানিয়া খাতুন, আয়েশা খাতুন,আনিছুর রহমান, আব্দুল কাদের, হাফিজুল ইসলাম, হেলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, কনস্টেবল সোনিয়া আক্তার, কনস্টেবল মোঃ বখতিয়ার হোসেন ও কনস্টেবল সিরাজুম মনীর সাক্ষী দিয়েছেন। ২৩ ফেব্র“য়ারি পাবলিক সাক্ষীর
জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ। আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. মোঃ ফরহাদ হোসেন ও অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান জগলু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)