“সাতক্ষীরার নলতা শরীফে ৫৭ তম বার্ষিক ওরছ শরীফ ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু”

প্রভাষক মো: মনিরুজ্জামান (মহসিন), নলতা শরীফ:
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা শরীফে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মোজাদ্দেদ, অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক, প্রখ্যাত সাহিত্যিক, দার্শনিক, সমাজসেবক, আত্মাধিক সাধক, জ্ঞান তাপস, মুসলিম রেঁনেসার অগ্রদূত, মুক্তবুদ্ধি ও অসাম্প্রদায়িক চিস্তা-চেতনার অধিকারী, মনোচিকিৎসক, ঐতিহাসিক, ‘‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা” এ মহান ব্রতকে সামনে রেখে নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠাতা, উদ্যোক্তা, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নেপথ্যের কারিগর,  পীরে কামেল সুলতানুল আউলিয়া কুতুবুল আকতাব গওছে জামান আরেফ বিল্লাহ হজরত শাহ্ছুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এঁর ৫৭ তম বার্ষিক ৩ দিন ব্যাপী পবিত্র ওরছ শরীফ ২৬,২৭,২৮ মাঘ ১৪২৭- বঙ্গাব্দ; ৯, ১০,১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রোজ- মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার নলতা পাক রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশের  মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
ওরছ শরীফের ১ম দিন ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাদ ফজর হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত পাক রওজা শরীফে খতমে কোরান মজিদ, মিলাদ শরীফ ও হজরত শাহছুফী সৈয়দ গফুর শাহ আল হোচ্ছামী (র.) এঁর রুহের উপর ছওয়াব রেছানী, সাড়ে ৯ টা হতে বেলা ১১টা পর্যন্ত পাক রওজা শরীফে হজরত শাহছুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এঁর বেছাল শরীফ উপলক্ষে কলেমাখানি, কুলখানী, আলোচনা সভা ও মিলাদ শরীফ, বেলা ১২টা, বাদ আছর ও বাদ এশা পাক রওজা শরীফে চাঁদর পেশ, রাত্র ১১টা হতে ভোর ৪.৩০ পর্যস্ত হজরত রছুলে করীম (ছাঃ) ও আউলিয়াগণের জীবনাদর্শ সম্পর্কে আলোচনা, ভোর ৪.৩০ হতে সকাল ৬.৩০ পর্যন্ত তাহাজ্জদ নামাজ, ফজরের নামাজ ও মোনাজাত।
 ১০ ফেব্রুয়ারি বুধবার বাদ ফজর হতে সকাল ১০টা পর্যন্ত পাক রওজা শরীফে খতমে কোরান মজিদ, মিলাদ শরীফ ও কুতুবুল আকতাব হাজী হাফেজ হজরত সৈয়দ ওয়ারেছ আলী শাহ (র.) এঁর রুহের উপর ছওয়াব রেছানী এবং পীর কেবলা হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা  (র.) এঁর আত্মীয়-স্বজন ও ভক্তবৃন্দের রুহের মাগফেরাত কামনা ও আলোচনা সভা, বেলা সাড়ে ১১টা, বাদ আছর ও বাদ এশা পাক রওজা শরীফে চাঁদর পেশ, বিকাল সাড়ে ৩টা হতে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত হজরত রছুলে করীম (ছা.) ও আউলিয়াগণের জীবনাদর্শ সম্পর্কে আলোচনা, ভোর সাড়ে ৪টা হতে সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাহাজ্জদ নামাজ, ফজরের নামাজ ও মোনাজাত।
১১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বাদ ফজর হতে সকাল ১০টা পর্যন্ত পাক রওজা শরীফে খতমে কোরআন মজিদ, মিলাদ শরীফ ও হজরত শাহছুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এঁর পাক রুহের উপর ছওয়াব রেছানী, বিশ্বের মুছলিম উম্মাহর জন্য দোয়ার অনুষ্ঠান ও আখেরী মোনাজাত।
নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ৫৭ তম বার্ষিক ওরছ শরীফে পবিত্র কোরআন ও হাদিছের আলোকে মূল্যবান আলোচনাসহ ওলি-আউলিয়াগণের জীবন দর্শন সম্পর্কে আলোচনা করবেন, হযরতুল আল্লামা আলহাজ্জ মাওলানা মোহাম্মদ আবুল কাশেম নূরী (পীরে তরিক্কত, খলিফায়ে দরবারে আলা হযরত, চেয়ারম্যান- আঞ্জুমানে রজভীয়া নূরীয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ), আলহাজ্জ হাফেজ মোখলেছুর রহমান বাঙ্গালী (আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিশিষ্ট ইসলামী চিস্তাবিদ, কুষ্টিয়া), আলহাজ্জ অধ্যাপক হাফেজ হাফিজুর রহমান (খতিব, গুলশান-১ জামে মসজিদ, ঢাকা),  মুফতী শাইখ মোহাম্মাদ উসমান গনী (সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফীজম্, ঢাকা),  মুফতী আব্দুল মজিদ পিরিজপুরী (খতিব, হবিগঞ্জ চৌধুরী বাজার কেন্দ্রীয় সুন্নী জামে মসজিদ এবং বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক), আলহাজ্জ মাওলানা মো: আশরাফুল ইসলাম আজিজী (পেশ ইমাম, নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদ, নলতা শরীফ), অধ্যক্ষ ড. মাওলানা কাফীলুদ্দীন সরকার (ঢাকা), হাফেজ মাওলানা ওয়ালীউল্লাহ আশেকী (প্রাক্তন ইমাম, পোলায়ু পেনাং, মালেশিয়া, খতিব- আশকোনা জামে মসজিদ, উত্তরা, ঢাকা), মুফতী মাওলানা মো: আলমগীর হুসাইন সাইফী (খতিব, বায়তুল আমান জামে মসজিদ, হবিগঞ্জ),  আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মো: আবু সাঈদ রংপুরী (মুফাচ্ছির ও মুহাদ্দিস, খতিব- নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদ), মো: সাইদুল ইসলাম আছাদ (আন্তর্জাতিক ক্বারী, ঢাকা)।
এদিকে নলতা শরীফে ৫৭ তম বার্ষিক ওরছ শরীফকে কেন্দ্র করে নলতা পাক রওজা শরীফ, মাহফিল মাঠ, অফিস, অফিসের সামনে প্রধান গেট, রাস্তা, পীরবভন, মসজিদ, বিভিন্ন গেস্ট হাউস,প্রধান ও অন্যান্য সড়ক, পীর আম্মার মাজার প্রাঙ্গণ, বিভিন্ন স্টল, তথ্য অনুসন্ধান ও প্রচার কেন্দ্র, আহ্ছানউল্লা ইন্সটিটিউট, হৃদয়ে আহ্ছান, নলতা হাসপাতালের ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প, প্রেসবক্স, রন্ধনশালা সহ আশপাশের এলাকা সেজেছে নতুন সাজে। এলাকায় বিরাজ করছে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশ ও সাজ সাজ রব।
এবার ওরছ শরীফে করোনা ভাইরাসের কারণে নতুনভাবে কোনো দোকানপাট বসতে না দেয়া মিশন কর্তৃপক্ষের এমন সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি বিরাজ করবে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ওরছ শরীফ অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে মিশন কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তির পাশাপাশি দিন-রাত পরিশ্রম করছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক।
ওরছ শরীফ অনুষ্ঠানের সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পিছিয়ে নেই প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, সংবাদকর্মী, স্কাউট ও রোভার স্কাউট কর্মকর্তা বা সদস্যবৃন্দ। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে পূর্বের ন্যায় সিসি ক্যামেরা।
ওরছ শরীফ অনুষ্ঠানে আসার উপযোগী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত হয়ে দো-জাহানের অশেষ নেকী হাসিলের জন্য নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের পক্ষ থেকে সভাপতি আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মো: এনামুল হক খোকন সকলকে বিশেষভাবে আহবান জানিয়েছেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)