বাংলাদেশের কঠিন পরীক্ষা ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে

গত ক্রিকেট বিশ্বকাপ পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে সব দেশই সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। তবে আগামী বিশ্বকাপ থেকে বদলে যাচ্ছে এই নিয়ম। এখন থেকে স্বাগতিক ছাড়া বাকি সব দেশকেই অংশ নিতে হবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে। আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি) অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে রয়েছে ২০২৩ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম পরীক্ষা অর্থাৎ সিরিজ।

বিশ্বকাপের জন্য নতুন ধরণের এই বাছাইপর্বের নাম দেয়া হয়েছে ওয়ানডে সুপার লিগ। আইসিসি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে আয়োজিত দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোকে আরো অর্থবহ করে তুলতে চায়। মূলত সে কারণেই এ ভাবনা।

২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফরম্যাট ও বাছাইপর্বের বিস্তারিত:

পরবর্তী ক্রিকেট বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ ভারত। তাই সুপার লিগে যে অবস্থানেই থাকুক না কেন আগামী বিশ্বকাপে ভারতের জায়গা নিশ্চিত। সুপার লিগে অংশগ্রহণ করবে মোট ১৩টি দল। প্রথম ১২টি দল হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মাঝে থাকা র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা ১২ দল। ত্রয়োদশ দলটি হল ওয়ার্ল্ডকাপ লিগ-২ এর বিজয়ী দেশ।

গত বছরের আগস্টে স্কটল্যান্ডের এবারডিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপ লিগ-২ এর প্রথম সিরিজ। মূলত তখন থেকেই শুরু হয়েছে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব। এই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সুপার লিগে অংশগ্রহণ করবে নেদারল্যান্ড।

ফরম্যাটের মারপ্যাঁচে বলা যায় বাংলাদেশের জন্য কঠিন পরীক্ষা নিয়ে এসেছে আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপ সুপার লিগ। আগামী ৩০ জুলাই ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে এই লিগ শুরু হলেও বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ রয়েছে ডিসেম্বরে, শ্রীলংকার বিপক্ষে।

অবশ্য বাংলাদেশকে দিয়েই এই সুপার লিগ শুরু হতে পারত। মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে গত মে মাসে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজটি স্থগিত করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে সেটিই বিশ্বকাপ সুপার লিগের প্রথম সিরিজ হওয়ার কথা ছিল।

যেভাবে সুপার লিগ খেলা হবে:

অংশগ্রহণকারী ১৩টি দল মোট আটটি সিরিজ খেলবে। এর মাঝে চারটি হোম, চারটি অ্যাওয়ে। প্রতিটি সিরিজেই কমপক্ষে তিনটি ওয়ানডে থাকবে। এভাবে প্রতিটি দল ২৪টি ম্যাচ খেলবে। সব সিরিজেই থাকবে ৩০ পয়েন্ট। অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ানডেতে ১০ পয়েন্ট করে থাকবে। সুপার লিগের অন্তর্গত প্রতি ম্যাচে বিজয়ী দল পাবে ১০ পয়েন্ট। ম্যাচ টাই বা ম্যাচ পণ্ড হয়ে গেলে দুই দল পাঁচ পয়েন্ট করে পাবে।

২৪ ম্যাচ শেষে ভারত ছাড়া পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ সাত দল সরাসরি ২০২৩ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে। সুপার লিগের যে পাঁচ দল সরাসরি কোয়ালিফাই করছে না তারা আরেকটি সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে এই দেশগুলোর সঙ্গে লিগ-২ যোগ দেবে আরো পাঁচটি দল। দশ দলের অংশগ্রহণে আরেকটি বাছাইপর্ব আয়োজিত হবে, সেখান থেকে শীর্ষ দুই দল চলে আসবে ২০২৩ বিশ্বকাপে।

সুপার লিগে বাংলাদেশের যেসব সিরিজ রয়েছে:

মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটি ছিল সুপারলিগে বাংলাদেশের প্রথম পরীক্ষা। আগামী ডিসেম্বরে শ্রীলংকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে রয়েছে পরবর্তী ওয়ানডে সিরিজ। এফটিপি অনুসারে বাংলাদেশের পরবর্তী সিরিজগুলো হচ্ছে- ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ (জানুয়ারি), নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ (ফেব্রুয়ারি),জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ (জুনে), ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ (অক্টোবরে)। এছাড়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ ও মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ খেলবে টাইগাররা।

বিশ্বকাপ সুপার লিগে খেলার নিয়মে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে আইসিসি। এখন থেকে প্রতি ম্যাচে দুই দলই দুটি করে ডিআরএস ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া প্রতিটি ফ্রন্ট ফুট নো বলের সিদ্ধান্ত দেবেন টেলিভিশন আম্পায়ার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)