বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য ভারত-বাংলাদেশের বড় পরিকল্পনা

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির জন্য ভারত বহুস্তরের কৌশল গ্রহণ করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বড় ধরনের বাণিজ্য সুবিধা দিতে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশটি। সম্প্রতি চীন বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নয়া দিল্লি।

শুক্রবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতীয় এই দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্য এবং অন্যান্য অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের অবাধ প্রবেশে বেশ কিছু সংযোগকারী উদ্যোগ সক্রিয় করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সংযোগ নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরা ইকোনমিক টাইমসকে বলছেন, সমুদ্রবন্দর, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন, রেল ও মহাসড়কে বড় ধরনের সংযোগকারী উদ্যোগ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ভারতের পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের বাজারের সঙ্গেও বাংলাদেশকে যুক্ত করতে সক্ষম হবে। ১৯৬৫ সালের আগে ভারত-বাংলাদেশের সঙ্গে রেলের পাশাপাশি অন্যান্য যেসব সংযোগ ছিল সেসব আবারো স্থাপন করার জন্য উভয় দেশই বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ব্যবহার করে আবারো পণ্য পরিবহন চালু করার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা ভারতে বাংলাদেশি রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। ইকোনমিক টাইমস বলছে, গত বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিশেষ সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে একটি চিঠি লিখেছেন।

বাণিজ্য ছাড় এবং ঋণের ক্ষেত্রে চীনের চেয়ে ভারতীয় শর্তাবলি বেশি সুবিধাজনক উল্লেখ করে ভারতীয় একটি সূত্র বলছে, চীনের সিদ্ধান্ত নেয়ার এক দশক আগেই বাংলাদেশের বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক-মুক্ত প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে ভারত; যা নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে সহায়তা করেছে।

গত দশকে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশে ভারতের রফতানির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার এবং একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন। অন্যদিকে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ৮ বছরে সড়ক, রেলওয়ে, পরিবহন ও বন্দর-সহ বিভিন্ন খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে ৮ বিলিয়ন ডলারের লাইনস অফ ক্রেডিটস (এলওসি) দিয়েছে ভারত। ভারতের নমনীয় এলওসির সবচেয়ে বড় গ্রহীতা বাংলাদেশ।

ইকোনমিক টাইমস বলছে, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ ড্রেজিং এবং ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামোগত প্রকল্পে সহায়তা করে আসছে ভারত।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)