বাংলাদেশকে ফের চিকিৎসা সামগ্রী দিয়েছে তুরস্ক
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তুরস্কের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। আজ সোমবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রমের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির কাছে এসব সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন (টিকা) এজেন্সি কর্তৃক তুরস্কের জনগণের পক্ষ থেকে দেয়া এসব চিকিৎসা সামগ্রী হস্তান্তর করেন চট্টগ্রামস্থ তুর্কি কনসুলেটের অনারারী কনসাল জেনারেল ও এ কে খান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সেক্রেটারি সালাহউদ্দিন কাশেম খান।
চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তুর্কি কনসুলেটের অনারারী কনসাল জেনারেল সালাহউদ্দিন কাশেম খান বলেন, বৈশ্বিক এ করোনাকালে ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের জনগণের পক্ষ থেকে এ ধরণের সহযোগিতা দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করবে। বর্তমান সংকটকালে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করায় অনারারী কনসাল জেনারেল এর মাধ্যমে তুরস্কের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে-সার্জিকেল মাস্ক ৫ হাজার পিস, পিপিই ১ হাজার পিস, এন-৯৫ মাস্ক ১ হাজার পিস, গগলস ১ হাজার পিস ও পোর্টেবল ভেন্টিলেটর (বিপেপ মেশিন) ২টি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ (উপ-পরিচালক), ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, মেডিকেল অফিসার (সিএস) ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও কভিড-১৯ এর ফোকাল পারসন ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া, এ.কে খান ফাউন্ডেশনের মূখ্য সমন্বয়ক আবুল বাশার, ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার কে.এম রেজাউর রহমান, টিকা প্রতিনিধি মঞ্জুর এলাহি, কো-অর্ডিনেটর ড. ইসমাইল গুনদৌদু, কো-অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম দয়াল প্রমূখ।
এর আগে, জুনের প্রথম সপ্তাহে তুরস্কের দাতব্য সংস্থাটি একই পরিমাণ চিকিৎসা সামগ্রী রাজধানী ঢাকার জন্য সরবরাহ করে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তখন এসব সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে এখন পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ১৮০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৯৫ জনের।
সম্প্রতি, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কভুসোগলু এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তুরস্ক। মহামারি মোকাবেলায় তুরস্ক নিজ দেশে লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন মেনে চলাসহ অনেক দেশে চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহ করে চলেছে। মহামারির এই সময়টি তিনি তার বন্ধু দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে চান। আগামীতেও তুরস্কের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
দেশটি প্রায় শতাধিক দেশের কাছ থেকে সাহায্যের অনুরোধ পেয়েছে। তুরস্ক সরকার যুক্তরাজ্য, ইতালি ও স্পেনেসহ পাঁচটি মহাদেশে চিকিৎসা ও সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। তুরস্কের চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, কিরগিজস্তান, আলজেরিয়া, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া, লেবানন, ফিলিস্তিন, কলোম্বিয়া, ইসরাইল, ইরান, ইরাক, লিবিয়া। এছাড়াও জার্মান, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, মলদোভা, আজারবাইজান, জর্জিয়া, আলবানিয়া, মন্টিনিগ্রো, বুলগেরিয়া, কোসোভো, বসনিয়া, সার্বিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহ করেছে।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক হান্স কুলগে তুরস্ককে এই মহামারিকালীন আন্তর্জাতিক সংহতি ও বহু দেশকে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।