যৌতুক দিতে না পারায় স্ত্রীকে ফিনিস পাউডার খাইয়ে হত্যার চেষ্টা

তোমাকে পেলে জীবন হবে ধন্য। জীবনে আর কোন চাওয়া পাওয়া নেই। তুমিই আমার সব। এমনই মধুর মধুর কথা বলে ভুলিয়েছিলো। অথচ বিবাহের পর দেখা গেলো তার আসল রূপ। পিতার বাড়ি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল দিয়েও মনভরাতে পারিনি ওই যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের।

ব্যবসার জন্য ১০লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমার পিতার নগদ অর্থ না থাকায় জমি বিক্রয় করে দেওয়ার প্রস্তাব দেই ওই যৌতুক লোভীরা। দাবি মেটাতে না পারায় ফিনিস পাউডার খাইয়ে হত্যারও চেষ্টা করে তারা। মারপিট তো নিত্য দিনের খাদ্য। মারাত্মক অসুস্থ্য শরীরে কাদো কাদো কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার শেখ মোহাম্মাদ আলী ছোট’র কন্যা মরিয়ম সুলতানা মিতু।

ভুক্তভোগী মিতু’র মাতা জানান, সাতক্ষীরা আলিয়া মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে এসে আমার একমাত্র কন্যা মিতুকে পছন্দ করে, খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের হাকিম মল্লিকের পুত্র শাহাবুদ্দিন সুমন। দুই জনের পছন্দ হওয়ায় উভয় পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে বিগত ২০১৪ সালে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন হয়। সে সময় সুমন ঢাকা এক্সচেঞ্জ অফিসে চাকুরি করতো। বিবাহের সময় যৌতুকের দাবি মেটাতে জামাতা সুমনকে ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয় মটরসাইকেল ক্রয়ের জন্য। কিন্তু লোভীদের সব অন্যের সম্পদের প্রতি লোভ লালসা থাকেই। যে কারণে আমার কন্যার উপর চাপপ্রয়োগ করে লক্ষ লক্ষ টাকার সরঞ্জাম আদায় করেও ক্ষ্যন্ত হয়নি সে।

সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতিতে আমার কন্যা অসুস্থ্য অবস্থায় আমার বাড়িতে ছিলো। এদিকে জামাতা সুমন চাকুরি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে এসে ব্যবসার পরিকল্পনা করে। কিন্তু ব্যবসা করতে পুঁজি লাগবে, আর পুুঁজির যোগান দিতে আবারো আমার কন্যার উপর চাপপ্রয়োগ করতে থাকে জামাতা সুমন। সে আমার কন্যাকে বলে তোমার পিতার জমি বিক্রয় করে ১০লক্ষ টাকা এনে দাও। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় জামাতা আমার কন্যা বা আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যে কারণে আমার কন্যা গত ২২ মে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের আগের দিন স্বামীর বাড়িতে যাই। তারপর থেকে কন্যা বা তার স্বামী আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করে না। গত ২ জুন আমার কন্যা মোবাইলে জানায়, আমাকে জীবিত দেখতে হলে এক্ষুনি চলে আসো।

কন্যা মিতুর বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, টাকা না দিয়ে সেখানে যাওয়া তার স্বামী সুমন, তার যৌতুক লোভী শ্বশুর হাকিম মল্লিক, মাহিমা খাতুন মারপিট করতে থাকে। ২ জুন তার স্বামী সুমন তার যৌতুক লোভী শ্বশুর হাকিম মল্লিক, মাহিমা খাতুন আমার কন্যাকে হত্যার জন্য জোরপূর্বক ফিনিস পাউডার খাওয়ার চেষ্টা করে। আমার কন্যা খেতে না চাইলে লোহার রড ও লাঠি সোটা দিয়ে ব্যাপক মারপিট করে। একপর্যায়ে অচেতন অবস্থায় আমার কন্যা ওই পাউডার খেতে বাধ্য হয়। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌছে কন্যাকে কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সেখানে তাকে ওয়াশ করে ফেলে রাখে হলে আমরা তাকে নিয়ে সাতক্ষীরায় চলে আসি। সাতক্ষীরায় উন্নত চিকিৎসার পরে আমার কন্যা জীবনে রক্ষা পেলেও গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় রয়েছে। একা একা হাটা চলা করতে পারে না। অথচ ওই যৌতুক লোভীরা একটি বারও তার কোন খবর নেই নি।

তিনি ওই যৌতুক লোভী স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্বামী সুমনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে শুক্রবার বিকাল ৫টায় কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)