সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলায় ১০দিন যাবত নেই বিদ্যুত: জেনারেটরে চার্জ দিতে হিড়িক

সুপার সাইক্লোন আম্পানের তান্ডবের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরা সদর, কলারোয়া, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় এখনও পল্লি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র চার্জ দিতে জেনারেটরের দোকানে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। ইঞ্জিনভ্যানযোগে জেনারেটর এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমান পদ্ধতিতে, আবার কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে জেনারেটর ভাড়া নিয়ে মোবাইল ফোনসহ ইলেকট্রিক যন্ত্র চার্জ দিয়ে নীরবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে গত ২০ মে থেকে সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পল্লি বিদ্যূতের সংযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। আম্পানের পর সরকারি দফতরগুলোতে সীমিত আকারে পল্লি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও বাড়িঘর ও বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠান এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রিক যন্ত্রের ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামের সাংবাদিক আব্দুল জলিল জানান, সদর উপজেলার তলুইগাছা, বাঁশদহ, ভবানীপুর, কুশখালী, কাথন্ডা ও বৈকারী এলাকায় এখনও পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তিনি জানান, জেনারেটর থেকে চার্জ দিতে হলে প্রতিটি বাটন মোবাইল ফোন ১০, টার্চ মোইল ফোন ২০ টাকা, টর্চলাইট ২০ টাকা ও ল্যাপটপ চার্জ দিতে ৪০ টাকা দিতে হচ্ছে জেনারেটর ব্যবসায়ীদের। তিনি আরো জানান, জেনারেটরে চার্জ দিলে ভোল্টেজ আপডাউনের কারনে অনেকের আবার মোবাইলসহ ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি নষ্টও হচ্ছে।
কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা বাজারের মোখলেছুর রহমান জানান, ঘূর্নিঝড় আম্পানে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার উপর বাড়িতে নেই বিদূৎ। নেই আয়ের উৎস। তার উপর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি চার্জ দিতে প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হচ্ছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। তিনি জানান, কাকডাঙ্গা বাজারের শফি ডেকোরেটার তার নিজের দোকানে জেনারেটর দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ব্যাটারিতে চার্জ দিচ্ছেন। এলাকার বিভিন্ন লোক লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছেন চার্জের জন্য। একই অবস্থা কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া মোড়, ফকিরপাড়ার মোড়, শাকদাহ, যুগিখালী, বুইতা, মাদরা, গয়ড়া, বুঝতলা সহ বিভিন্ন এলাকায়।

সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডি.জি.এম (কারিগরী) প্রকৌশলী মাসুম আহম্মেদ জানানন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সাতক্ষীরা জেলায় ১ হাজার ৭৮২ টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তার ছিঁড়ে গেছে বহু জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার প্রতিটি উপজেলায় বিদ্যুৎ লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। তবে কলারোয়া উপজেলায় সব থেকে বেশী বিদ্যুৎ লাইনে ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। দুই এক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে বলে তিনি আরো জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)