২০২৩ সালে এক ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, দেড় ঘণ্টায় কক্সবাজার

বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন শহর কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করতে কাজ করছে সরকার। আগামী ২০২৩ সাল নাগাদ কক্সবাজার যাওয়া যাবে ট্রেনে করে। জানা গেছে, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত হাই স্পিড ট্রেন সার্ভিস সংযুক্ত করা হবে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মাত্র এক ঘণ্টায় যাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ঢাকা-কক্সবাজার যাওয়া যাবে।

চট্টগ্রাম (দোহাজারী)-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও, কাজের অগ্রগতি দেখে মনে হচ্ছে তার আগেই কাজ সম্পন্ন হবে। স্থানীয় ১৩টি ছোট-বড় নদী পেরিয়ে এ রেলপথ নির্মিত হবে। প্রকল্পের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ ৮টি কম্পোনেন্ট রয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭৬ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা।

রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে

রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে

এরইমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কারণ জমির মালিককে তিনগুণ টাকা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। মানুষজন বরং রেললাইন নির্মাণে সহযোগিতা করছে। বর্ষার সময়েও যাতে কাজ বন্ধ না হয়, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে, তাহলে এ প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে।

প্রকল্পের কার্যাদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথ থাকলেও নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডুয়াল গেজে রূপান্তর করা হবে। পাশাপাশি ফৌজদারহাট থেকে একটি কার্ভ বা কর্ডলাইন নিয়ে ষোলশহর রেলস্টেশনে যুক্ত করা হবে।

চলমান কারিগরি প্রকল্পের মাধ্যমেই সম্ভাব্য ব্যয় বের করা হয়েছে। অধিকাংশ অর্থই দেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে এডিবি। সংস্থাটির ঋণের পাশাপাশি সরকারি অর্থও ব্যয় হবে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রকল্পের বিপরীতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ ঠিক করা হবে।

কক্সবাজার রেলষ্টেশনটির একটি গ্রাফিক্স মডেল

কক্সবাজার রেলষ্টেশনটির একটি গ্রাফিক্স মডেল

এর আগে বিশাল কাজ বাস্তবায়নের জন্য ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল প্রকল্প প্রস্তুতিমূলক সুবিধার জন্য কারিগরি সহায়তা’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কারিগরি প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পরেই মূল প্রকল্প শুরু হবে। কারিগরি প্রকল্পটি ২১২ কোটি ৬৪ লাখ ৩১ হাজার টাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ১৩টি নদীর ওপর রেলওয়ে ব্রিজ নির্মাণের লক্ষ্যে ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ ক্লাসিফিকেশন দেয়ার জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরাবর অনুরোধ করা হয়েছে। নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স অনুযায়ী প্রস্তাবিত ব্রিজের উচ্চতা বিদ্যমান ব্রিজের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। তাই ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলাদেশের রেলখাতের বিকাশে এডিবি সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রকল্পটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে একটি অগ্রাধিকার বিনিয়োগ।

এই রেলপথ নির্মিত হলে তা দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পর্যটন উন্নয়নকে আরো একধাপ এগিয়ে নিবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)