করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৮ হাজার ৯০৭

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ৯০৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এরইমধ্যে মরণঘাতী ভাইরাসটি উৎপত্তিস্থল চীন ছাড়াও বিশ্বের মোট ১৯৭টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বুধবার সকাল পর্যন্ত একদিনে দুই হাজার ৩৮২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ৯০৭ জনে পৌঁছেছে। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৮৭৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২২ হাজার ৬২৯ জন। যাদের মধ্যে ইতালি, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবকে ‘মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ডব্লিউএইচও। তাছাড়া ইউরোপকে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি।

চীনের চেয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার বাড়তে থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান  ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস ঘোষণাটি দেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২৮১ জনের। অন্যদিকে ইতালিতে এক দিনেই ৭৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করোনা ভাইরাসে দেশটির মোট মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ৮২০ জনে দাঁড়িয়েছে।

সর্বোচ্চ মৃত্যুর তালিকায় এরইমধ্যে করোনার উৎসস্থল চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। তাছাড়া ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৬৯ হাজার ১৭৬ জন ছাড়িয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার ৮১১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাছাড়া মারা গেছেন ১ হাজার ৯৩৪ জন।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৮০৮ জন, আর প্রাণ গেছে ৭৭৫ জনের। স্পেনে আক্রান্ত ৪২ হাজার ৫৮ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৯৯১ জনের। সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ৯ হাজার ৮৭৭ এবং মারা গেছেন ১২২ জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ৮ হাজার ৭৭ ও মৃতের সংখ্যা ৪২২। তাছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক লোক প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

অপরদিকে প্রথমবারের মতো মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৩৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পাশাপাশি প্রাণ গেছে ছয়জনের। তাছাড়া কোয়ারেন্টাইনে আছেন আরো অনেকে। যাদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশফেরত।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। তাছাড়া শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

বর্তমানে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)