এক মাসের মধ্যেই করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আসতে দেড় বছর লাগার কথা জানালেও যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রতিষেধক পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিষেধক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেনার ইনস্টিটিউটের প্রফেসর সারাহ গিলবার্ট জানিয়েছেন, তিনি ও তার দল করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে দ্রুত কাজ করছেন। শিগগিরই ইতালিতে এই প্রতিষেধক প্রস্তুত করা হবে। এছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) এর অন্তত এক হাজার ডোজ ব্যবহার করা হবে।

সারাহ গিলবার্টের এই দলটিই ২০১২ সালে ছড়িয়ে পড়া মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাস মোকাবিলায় গবেষণা করছিলেন। একই গোত্রের হওয়ায় নভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে আগের অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাচ্ছেন তারা।

জেনার ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে প্রফেসর গিলবার্ট বলেন, এনসিওভি-১৯’র মতো নতুন প্যাথোজেনগুলোর জন্য দ্রুত প্রতিষেধক প্রয়োজন। অন্য করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের’ জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময় কমিয়েছি। এটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে অ্যাডভেন্ট।

Virus-2.jpg

ইতোমধ্যে ইতালিয়ান ওষুধ প্রস্তুতকারক অ্যাডভেন্ট এসআরএল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক উৎপাদনে রাজি হয়েছে। ফলে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে কাজ। এক মাসের মধ্যেই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হবে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক।

কোনও রোগের প্রতিষেধক প্রস্তুত করতে সাধারণত কোটি কোটি ডলার প্রয়োজন হয়। এরপর তা পরীক্ষা করা হয় হাজারও মানুষের ওপর। সেখানে সফল হলেও প্রতিষেধক বাজারে বিক্রির আগে বেশ কিছু নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়।

তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে খুব বেশি সময় নেয়ার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৭৬ হাজার। বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এনসিওভি-১৯। শিগগিরই এর প্রতিষেধক পাওয়া না গেলে এর ক্ষয়ক্ষতি সীমা ছাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Virus-2.jpg

করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বুধবার ভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে মারা গেছেন আরও ১০৮ জন। এ নিয়ে শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১১২ জনে। এছাড়া, চীনের বাইরে মারা গেছেন অন্তত আটজন। এর মধ্যে হংকং ও ইরানে দু’জন করে এবং তাইওয়ান, জাপান, ফ্রান্স ও ফিলিপাইনে একজন করে মারা গেছেন।

গতকাল নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৯ জন। তবে এটি তার আগে দিনের চেয়ে ১ হাজার ৬৯৩ জন কম। হুবেইয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৩১ জনে। সারাবিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬ হাজার ২৬২ জনে।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রয়েছে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রমোদতরী প্রিন্সেস ডায়মন্ডে। এই প্রমোদতরীতে ৬২১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

সূত্র: ডেইলি মেইল, রয়টার্স

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)