কাঁকড়া ও কুচে রপ্তানি বন্ধ থাকায় শ্যামনগরের চাষীরা দুঃচিন্তায়

চীনে সম্প্রতি করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় দেশের কাঁকড়া ও কুচে বিদেশে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এতে একদিকে সরকার বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁকড়া ও কুচের সাথে জড়িত হাজার হাজার চাষী লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সেই সাথে হ্যাচারী মালিক ব্যবসায়ী সহ রপ্তানিকারকদেরও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। শ্যামনগর উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের মতে চাষীরা দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ী, ভেটখালী, হরিনগর, নওয়াবেঁকী ও মুন্সীগঞ্জ এলাকায় ঘুরে কাঁকড়া ও কুচে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারা বছরের মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ মার্চ কাঁকড়া ও কুচে বেশী মুনাফা হয়ে থাকে। এর মধ্যে জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাস কাঁকড়া প্রজনন মাস হওয়ায় সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরনের পারমিট বন্ধ থাকে।

চীনে করোনা ভাইরাস এর কারনে বর্তমান সরকার ২৩ জানুয়ারী থেকে দেশের বাহিরে কাঁকড়া ও কুচে রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। চিংড়ী রপ্তানি আয়ের পরেই কাঁকড়ার অবস্থান। কাঁকড়া চাষে ঝুঁকি কম হওয়ায় এবং মুনাফা বেশি হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে কাঁকড়া চাষ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে ক্রিকেট অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান সহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খাচার মধ্যে সপসেল কাঁকড়ার প্রজেক্ট করে ব্যবসা অব্যহত রেখেছে। ইতিমধ্যে সুন্দরবন সংলগ্ন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন শিল্প এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে। এ সমস্ত কাঁকড়ার প্রজেক্টে এলাকার অগনিত দরিদ্র যুবক-যুবতীরা চাকুরী করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। বিদেশে কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ হলে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়বে।

কলবাড়ী বাজারের আখি ইন্টারপ্রাইজ এর মালিক আনারুল গাজী জানান, প্রতি বছর জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী দুই মাস সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরন বন্ধ থাকে। যার কারনে ডিসেম্বর মাসে কাঁকড়া চাষীরা কাঁকড়া ক্রয় করে তাদের কাঁকড়া প্রজেক্টে ছেড়ে রাখে। ফেব্রুয়ারী মাসে ঐ কাঁকড়া অতিরিক্ত মুনাফায় বিক্রি করে, কিন্তু ২৩ জানুয়ারী থেকে দেশের বাইরে কাঁকড়া রপ্তানি সরকারি ভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় চাষীরা পড়েছে বিপাকে।

তিনি আরও জানান, কাঁকড়া আহরন বন্ধ মৌসুমে কাঁকড়া আহরনকারীরা প্রতি কেজি কুচে ৪৫ টাকা দরে ক্রয় করে রৌদ্র শুকিয়ে বস্তা বন্দি করে রাখে। সুন্দরবনে কাঁকড়া পারমিট শুরু হলে ওই শুকনা কুচে প্রতি কেজি ৩শত টাকা দরে বিক্রি করবে। দাতিনাখালী গ্রামের রুবেল ও মহিবুল­াহ জানান, তারা আনুমানিক ২শত কেজির অধিক কুচে ক্রয় করে শুকিয়েছি। এছাড়া আমাদের এলাকায় অগনিত কাঁকড়া চাষীরা কুচে শুকিয়ে বস্তা বন্দি করে রেখেছে। তবে বিদেশে কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ থাকলে শুকনা কুচে কেনার লোক পাওয়া যাবে না। এতে আমরা ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হব।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)