আবরার হত্যা মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বদলির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম এ আদেশ দেন। এদিন পলাতক অসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তাদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

আইনুযায়ী মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় এ মামলা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির জন্য সিএমএম বরাবর নথি পাঠান বিচারক। এখন সিএমএম মামলাটি মহানগরে পাঠাবেন। মহানগর আদালতে মামলাটির পরবর্তী বিচার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।

চকবাজার থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে পালিয়ে থাকা এজাহারভুক্ত আসামি মোর্শেদ অমত্য ইসলাম রোববার আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ মামলায় গত ৫ জানুয়ারি চার পলাতক শিক্ষার্থীকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন আদালত, যার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।

এর আগে বছরের ১৮ নভেম্বর চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম। গ্রেফতার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

৩ ডিসেম্বর আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ওই চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে, এ সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন।

আসামিরা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম তিনজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।

অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ছয়জন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন ও এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।

গ্রেফতার ২১ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ওই ঘটনায় নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে ওই হত্যা মামলা করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)