ডুমুরিয়ার শোভনা ও খর্ণিয়ার ভদ্রা নদীর উপর ভেঙ্গে পড়েছে কাঠের ব্রিজ: এলাকাবাসীর দাবি বেইলী ব্রিজের

ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ও খর্নিয়া ইউনিয়নের সংযোগ স্থলে ভদ্রা নদীর উপর নির্মিত কাঠের সেতুটি নদীর মাঝখান দিয়ে ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে এলাকার দুই ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

নিম্নমানের খুটি ও কাঠ ব্যবহার করে যেনতেনভাবে কাঠের এই ব্রিজটি নির্মাণ করার সময়ে স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে। তাছাড়া নানাভাবে হয়রানি করে।ভরাট হওয়া ভদ্রা নদীর উপর পীচ ঢালা পথ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ভদ্রা নদী খননের সময়ে কেটে ফেলা হয়। সে সময়ে স্থানীয় জনগণ নদীর উপর কংক্রিটের ব্রিজ অথবা বেইলী ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানায়। কিন্তু সাময়িকভাবে জনসাধারণের চলাচলের জন্য একটি কাঠের সেতু নির্মাণ শুরু করে। কাঠের সেতুটি নির্মাণের সময়ে ঠিকাদার নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় জনসাধারণ বাধা দেয়। তাছাড়া শিক্ষার্থী, এলাকার নারী-পুরুষ মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ করে এর প্রতিবাদ জানায়। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষিপ্ত হয়ে থানায় জিডি ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়। তাছাড়া ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েক নেতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিম্নমানের খুটি ও কাঠ ব্যবহার করে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করে ১৫ দিন আগে যানবাহন ও জনসাধারণ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। সপ্তাহ খানেক পূর্বে সেতুটির মাঝ দিয়ে ধসে পড়ে। বর্তমানে সেতুটি এতটাই হেলে পড়েছে যে জোয়ারের সময়ে সেতুটি দিয়ে যানবাহন তো দুরে থাক হেটে পার হওয়া যায় না।

সবজি কৃষি পণ্য উৎপাদনে জেলার মধ্যে শোভনার বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। বছরে যে পরিমাণ সবজি উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক সবজি শোভনা গ্রামে উৎপাদিত হয়। তাছাড়া কূলচাষ, চিংড়ি ও মাছচাষেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে গ্রামটির। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার মানুষ।

শোভনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল গণি এ বিষয়ে বলেন, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সেতু নির্মাণ বন্ধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারকে বলার পরও তারা সেটা করেনি। উপরন্তু তারা থানায় জিডি করেছে। বিভিন্ন দপ্তরে ভুয়া অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট পোল্ডারের (২৬ নম্বর পোল্ডার) এসও (সেকশন অফিসার) মো: হাসনাতুজ্জামান বলেন, কতিপয় ব্যক্তি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সেতু নির্মাণে বাধা দেয়। তারা নির্মাণকাজে আনা খুটি চুরি করে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, সেতুটি ধসে পড়ায় সেটি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, ভদ্রা নদীর উপর শোভনা ও খর্ণিয়া ইউনিয়নের সংযোগ সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। এত দ্রুত সেতুটি কিভাবে ভেঙ্গে পড়ল সেটি ভাববার বিষয়। নির্মাণ কাজে ক্রুটি নাকি অনিয়মের মাধ্যমে যেনতেনভাবে নির্মিত হওয়ার কারণে এটি হয়েছে কিনা সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)