সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর বাজারে সরকারি জমি ইজারার দেওয়ার নামে অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে রতনপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা(নায়েব) আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।স্থানীয় অনেকে জানান, রতনপুর বাজারে দোকান বানানোর জন্য সরকারি ভাবে বরাদ্দ ১০-১২ ফিট জায়গা।
ওই সরকারি জমি ইজারা নেওয়ার জন্য ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুলকে টাকা দিতে হয়েছে ৪০ হাজার থেকে আরম্ভ করে আড়াই লক্ষ টাকা। তার চাহিদা মত টাকা দেওয়ার পরও এখনও অনেকেই ইজারার দলিল বুঝে পাননি।
সরকারি জমি ইজারার নামে বাণিজ্যে মেতেছেন কালিগঞ্জের ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল
সরকারি জমি ইজারার দেওয়ার নামে অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে রতনপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা(নায়েব) আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
Posted by সাতক্ষীরা প্রতিদিন on Monday, 2 December 2019
ভূমি কর্মকর্তার প্রতারণার শিকার ধলবাড়ীয়া ইউনিয়নের মৃত বিসে মোড়লের ছেলে কদমতলা বাজারের দোকানদার মোরশেদ আলী মোড়ল বলেন একটি দোকান নেওয়ার জন্য নায়েব আশরাফুল আলমের সাথে তার ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। আশরাফুল হোসেনের চাহিদা মত তাকে অগ্রিম ১ লক্ষ টাকা দেন মুনসুর আলী।
পরবর্তীতে বাজারের টয়লেট ভেঙে মুনসুর আলীর দোকানের জায়গা দিতে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা প্রদান করেন নায়েবকে। এরপর থেকে দোকান ঘর বানানোর জায়গা বুঝে নেওয়ার জন্য তিনি রতনপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের নায়েব আশরাফুল ইসলামের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করতে থাকেন।গত ১ বছর পেরিয়ে গেলেও তহশিলদার দোকানের জায়গা বুঝিয়ে দিতে পারেননি মুনসুর আলীকে। এখন তার দেওয়া ১ লক্ষ টাকাও ফেরত দিচ্ছেনা রতনপুর ভূমি অফিসের নায়েব।
স্থানীয় রতনপুর বাজারের ব্যবসায়ী ও উচ্ছেপাড়া গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ বলেন, বাজারে একটি দোকান নেওয়ার জন্য তিনি রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামকে ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা দিয়েছেন কয়েকমাস আগে। ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আশরাফুলের কথামত তিনি টাকা দিয়েছেন যুবউন্নয়নে ২ বছর প্রকল্পের আওতায় ওই ভূমি অফিসে কর্মরত শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালি এলাকার আবুল কাশেম গাজীর ছেলে তৈহিদুর রহমানের কাছে।
সব টাকা বুঝে নিয়ে একটি ডায়েরির পাতায় ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা রশিদ গাজীর কাছ থেকে বুঝে পেয়েছে এই মর্মে সই করে দিয়েছে তৈহিদুর। গত দুই বছর পার হয়ে গেলেও আজও দোকান বুঝে পাননি রশিদ আলী।
এছাড়া রতনপুর ইউনিয়নের গান্ধুলিয়া এলাকার মৃত বাহার আলী গাজীর ছেলে চাউল কুড়া ব্যবসায়ী সাকের আলী জানান, দোকান বরাদ্দের নাম করে নায়েব আশরাফুল ইসলাম তার কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছে। তবে দোকান বরাদ্দের কাগজ পত্র তিনি বুঝে পেয়েছেন।
প্রায় ১শ দোকান বরাদ্দের নাম করে অর্ধকোটি টাকার বেশি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়ে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন তহশিলদার আশরাফুল। টাকা দিয়েও স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।
দোকান বরাদ্দেরে নামে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি অফিসে কর্মরত তৈহিদুর রহমান সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। এমনকি টাকা নিয়ে সই তিনি করেননি তার সই কেউ নকল করেছে এমনটাই বলেন। সে টাকা নিয়েছে কিনা এমন কোন প্রমাণ এই প্রতিবেদকের কাছে আছে কিনা সেটা জানতে চান তিনি।
দোকান বরাদ্দের নামে ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। দোকান ইজারা নিতে গেলে কত টাকা লাগে সেটি আপনারা জানেন। এছাড়া তিনি একটি তদন্ত কাজে ব্যস্ত আছে বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, এবিষয়ে তিনি অবগতনন।তাছাড়া কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।