হলি আর্টিসান মামলার আসামিরা আদালতে

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হলি আর্টিজান মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে বেলা ১২টায়। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করবেন। এরইমধ্যে এই মামলায় গ্রেফতার আট আসামিকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। 

এদিকে, রায়কে ঘিরে আদালতপাড়াসহ গোটা রাজধানীতে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের ওই রেস্তোরাঁয় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে গলাকেটে ও গুলি চালিয়ে হত্যা করে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত পাঁচ তরুণের সবাই মারা পড়েন। তারা হলেন- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাজ ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।

এছাড়া এ মামলায় আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে নিহত আটজন হলেন- তামিম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।

রায়ে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম সারোয়ার খান (জাকির) আসামিদের একটি ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং কয়েকটি ধারায় যাবজ্জীবন সাজা প্রত্যাশা করছেন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ করতে পারেন নাই মর্মে খালাস পাবেন বলে আশা করছেন।

নব্য জেএমবি ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় হামলা চালিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে এই হামলার ছক কষেছিল বলে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ৩ ডিসেম্বর মামলার বাদী এসআই রিপন কুমার দাসের জবানবন্দি নেয়ার মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার শুরু হয়েছিল। ২০০৯ সালের এই আইনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হত্যার অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আলোচিত এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এই মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন।

আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)