এবার তালার ইউএনও’র নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করেছে সেই প্রতারক সাইদ

তালায় স্টিকার সাংবাদিক খ্যাত সাঈদ সম্রাট নামের এক প্রতারক দিনের পর দিন অবাধে চাঁদাবাজি করে চলেছে। ‘ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রীন সাতক্ষীরা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনবরত কাজ করে চলেছেন। আর এই সুযোগকে পুঁজি করে এবার তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেনের নাম ব্যবহার করে চাঁদা নিয়েছে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে। অভিযুক্ত প্রতারক সাঈদ সম্রাট (২০) তালা সদরের রহিমাবাদ গ্রামের মহিউদ্দীন গাজীর ছেলে।

জানা যায়, তালা সদরের ডাঙ্গানলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসেনের কাছ থেকে এই প্রচারক ‘ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রীন সাতক্ষীরা’ ও ডেঙ্গু বিষয়ক কর্মসূচী পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান ভিজিটের নাম করে চাঁদা নিয়েছে। এ সময়ে সাইদ ওই শিক্ষককে বলেন, ইউএনও স্যার তাকে পাঠিয়েছেন বিদ্যালয়ের ডেঙ্গু ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ভিজিট করতে। তাছাড়া ইউএনও স্যার মোট দশটি স্কুলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়েছেন তাকে এটাও জানান ।

এ বিষয়ে ডাঙ্গানলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসেন জানান, সাইদ সম্রাট নামের একটি ছেলে তার স্কুলে যায় কিছুদিন আগে। যেয়ে সে বলেন ইউএনও স্যার তাকে দশটি স্কুলের দায়িত্ব দিয়েছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে ভিজিট করার জন্য। এই কথা বলে সে আমার স্কুলের বেশ কিছু ছবি তোলেন এবং ডেঙ্গু বিষয়ে আমার বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করেন। তারপরে সে আমার কাছে কিছু টাকার দাবী করায় আমি তাকে অল্প পরিমাণে কিছু টাকা দিয়েছিলাম।

তিনি আরও জানান, ইউএনও স্যারের না বলায় আমি তাকে গুরুত্বের সাথে সকল তথ্য দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি সে একটা প্রতারক।আর ইউএনও স্যারের নাম ব্যবহার করে এইভাবে চাঁদাবাজি করছে। বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি ইতিমধ্যে।

অন্য এক ব্যক্তি জানান, শুধু ডাঙ্গানলতা স্কুল নয়,সে সুভাষিণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়,ঢুলুন্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরও অনেক জায়গায় থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান ভিজিটের নাম করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন।

সূত্রে জানা যায়, এর আগে সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দিয়ে গ্রামের নিরিহ মানুষকে ভয় ভিতি দেখিয়ে সে দীর্ঘদিন চাঁদাবাজি করছিলো। বিষয়টি সময় টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মমতাজ হোসেন বাপির নজরের আসলে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে সাতক্ষীরার প্রেসক্লাবে আটকে রাখেন। একটি পর্যায়ে প্রতারক সাইদ নিজের মুখে স্বীকারোক্তি দেয় সে সময় টিভির স্টিকার ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন। তাকে পুলিশের দেওয়ার কথা বললে হাত পা ধরে সে যাত্রায় কোন রকমে পার পেয়ে গেলেও থেমে নেই তার এই চাঁদাবাজির কৌশল।

আরও জানা যায়, বেশ কিছু দিন আগে তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের পাশে একটি খাবারের হোটেল থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হোটেল মালিকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছে এই সাইদ। এই রকম অনেক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ভিজিটিং কার্ড ব্যবহার করতে দেখা যায়। কোথায় লেখা তিনি টিভি আর্টিস্টি আবার কোথাও দেখা যায় তিনি জাদুকর। এছাড়া, তার মোটরসাইকেলে ইমার্জেন্সী হর্ণ ব্যবহার করে দাপিয়ে বেড়ায় তালা বাজার। এরআগে তার বিরুদ্ধে ইভটিজিং এর অভিযোগও ছিল।

এ ব্যাপার নিয়ে তালা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম হায়দার জানান, তার এ সকল বিষয় আমি শুনেছি, এটি প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্য অনেক দুঃখজনক।

এ সকল বিষয়ে অভিযুক্ত সাইদ সম্রাট বলেন, আমি ওই স্কুলে গিয়েছিলাম তবে ইউএনও স্যারের নাম ব্যবহার করিনি।
তিনি কোন পত্রিকায় কাজ করেন জানতে চাইলে বলেন, তিনি অনলাইন পল্লী টিভির রিপোর্টার।

এদিকে হাসান আলী বাচ্ছু নামের এক রিপোর্টার জানান, পল্লীটিভিতে প্রথম থেকে-ই তিনি কাজ করে আসছেন। সাইদ সম্রাট নামের কোন রিপোর্টার নেই পল্লী টিভি অনলাইনে। সাইদ এই পোর্টালের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করছেন বলে জানান তিনি।

এ সকল বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন জানান, আমি কাউকে এমন অনুমতি কখনো দেয়নি। তিনি আরও জানান, তার বিরুদ্ধে আইনগত যে ব্যবস্থা আমি সেটি নিবো

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)