ইছামতি নদীতে স্ব স্ব জলসীমানার মধ্যে থেকে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই বাংলার মিলন মেলা

হিন্দু সম্প্রদয়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পুজার বিজয়া দশমীতে এবারও সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত নদী ইছামতিতে স্ব স্ব জলসীমানার মধ্যে থেকে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হয়েছে। এর ফলে তেমন জাক-জমক পূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি শত বছরের ঐতিহ্যবাহী দুই বাংলার মানুষের মিলন মেলা। সকাল থেকে ইছামতি নদীর দু’পারে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হলেও স্ব স্ব জলসীমার মধ্যে নৌকা ভাসানোর কারণে দুই বাংলার মানুষের মিলন মেলায় কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে। আর এর ফলে অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরে যান দু’বাংলার মানুষ।

তবে, এবারের এ প্রতিমা বিসর্জনের মিলন মেলায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক এস.এম, মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার মোঃ ইলতুৎ মিশ, দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল গনি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরিন প্রমুখ।
এর আগে বিজিবি ও বিএসএফ যৌথ সমাবেশ করে দুই দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক কৌশল গ্রহণ করে। এর সাথে যুক্ত হয় দেবহাটা উপজেলা পরিষদ ও ভারতের টাকি পৌরসভা ।

মিলন মেলায় অংশ নিয়ে দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল গনি বলেন, বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি হিসাবে দুই বাংলার এই মিলন মেলা আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। শত বছর ধরে এই মেলা হয়ে আসছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় একাকার হয়ে যায় সব ধর্ম বর্ণের মানুষ। তারা পরস্পরকে শারদীয়া শুভেচ্ছা জানান।

ভারতের পশ্চিম বাংলার টাকি পৌরসভার মেয়র সোমনাথ চ্যাটার্জি বলেন, প্রতি বছর আমরা এই দিনটির অপেক্ষায় থাকি। এদিন দুই বাংলার মানুষ তাদের ভৌগলিক সীমানাকে পেছনে ফেলে একাকার হয়ে যায়। তিনি বলেন আজ উমাদেবী মর্ত্যধাম থেকে স্বামীগৃহে চলে যাচ্ছেন। আমরা মায়ের কাছে পুত্রং দেহি, ধনাং দেহি, মঙ্গল দেহি, শান্তি দেহি, ফল দেহি মন্ত্র পাঠ করে তাকে বিদায় দিতে এসেছি। তিনি চলে গেলেন কৈলাশধামে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে।

ঘোটকে কৈলাশধাম থেকে চিরশান্তির বরাভয় নিয়ে মর্ত্যভূমিতে এসেছিলেন দেবী দুর্গা । জাগতিক অসুর শক্তি , অপশক্তি, দুর্গতি ও অমঙ্গলকে পরাভূত করে দেবী ছড়িয়ে দিলেন মঙ্গল সুখ ও শান্তির ললিত বাণী। তিনি ধরাধামে দিয়ে গেলেন অঢেল সম্পদ ,ফসল। পূরণ করে গেলেন ভক্তদের মনোবাসনা। মিলনমেলার মধ্য দিয়ে ‘মা তুমি আবার এসো’ এই আহবান রেখে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিদায় দিলেন জগজ্জননী দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)