৩৬ তলার উপরে ঝুলন্ত সুইমিংপুল;রয়েছে আরো অদ্ভুত স্থাপনা

প্রকৃতি পৃথিবীতে এমন সব মনোরম জিনিস তৈরি করেছে যা দেখে আমরা মাঝে  মাঝে হতবাক হয়ে যাই। অসম্ভব সুন্দর পাহাড়, নদী, সাগর জলাশয় আরও জানা-অজানা অনেক কিছু। তবে আজকে আপনাদের এমন কিছু স্থাপনের কথা জানাবো যা প্রকৃতি ধারা তৈরি হয়নি তৈরি করেছে মানুষ। টেকনোলজি এত দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে যে এমন এমন জিনিস তৈরি করা হচ্ছে যা সম্পর্কে আমরা চিন্তা করতে পারিনা।

ঝ্যাংজিয়াজি গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু

জীবনে হয়ত অনেক সেতু দেখেছেন, কোনোটি কংক্রিট দিয়ে তৈরি আবার কোনোটি স্টিলের পাত দিয়ে তৈরি। কখনো কি এমন একটি সেতু কথা চিন্তা করেছেন যেটি সম্পূর্ণ কাচঁ দিয়ে তৈরি। এমনই একটি সেতু তৈরি করা হয়েছে চিনে যেটি সম্পন্ন কাঁচের তৈরি এবং এটি পৃথিবীর সবথেকে উঁচু এবং সবচেয়ে দীর্ঘ কাচের সেতু। এই সেতুর কাচে ইঁট-পাথর তো দূরের কথা, একটা ভয়াল দর্শন স্লেজ হ্যামার দিয়ে আঘাত করলেও এর কিছুই হবে না।

এই চ্যালেঞ্জের প্রমাণ দিতে সেতু কর্তৃপক্ষ বিবিসির ড্যান সিমোনসকে সুযোগ করে দিলেন। তিনি একটি স্লেজ হ্যামার দিয়ে ব্রিজের কাচ ভাঙার চেষ্টা করবেন। চায়না ন্যাশনাল ট্যুরিজম অফিস জানায়, মাটি থেকে ১০০০ ফুট ওপরে এই ব্রিজটি ১৪০০ ফুটেরও বেশি পথ পর্যন্ত চলে গিয়েছে। সিমোনসের হ্যামারের প্রথম আঘাতটি কাচের প্যানেলের ওপরের স্তরে একটু চিড় ধরায়।

ঝুলন্ত কাচের সেতু

ঝুলন্ত কাচের সেতু

কিন্তু পরের দুই পরতে ডজন খানের আঘাতের পরও একটা আঁচড়ও কাটতে পারেনি। চীনের এই স্কাইওয়াক ব্রিজের শক্তিমত্তা পরীক্ষার জন্যেই এ কাজটি করা হয়। গত বছরও চীনের আরেকটি কাচের স্কাইওয়াক বন্ধ হয়ে যায়। এতে চিড় ধরে। মাটি থেকে ৩ হাজার ২৮০ ফুট উঁচু গোটা কাঠামোটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, নতুন এই সেতুটি ২০ ফুট চওড়া। একযোগে ৮০০ মানুষের ওজন বইতে পারে সেতুটি।

পেরুর ঝুলানো কাঁচের তৈরি হোটেল

পেরুতে রয়েছে ৩ হাজার ৮২০ টি বিলাসী হোটেল। এর মধ্যে সবথেকে অদ্ভুত ও অন্যতম একটি বিলাসী হোটেল হচ্ছে পাহাড়ের গাঁয়ে ঝুলানো স্বচ্ছ কাঁচের তৈরি হোটেল। হোটেলগুলো স্বচ্ছ কাঁচের তৈরি হওয়ায় এটিতে চড়ার সাহস সবার থাকে না। মজবুত এলুমিনিয়াম আর পলিকার্বনেটেড দ্বারা তৈরি এর ২৫ ফিট লম্বা ক্যাপসুল তৈরি করা হয়েছে। ক্যাপসুলের ভিতরে আলাদা আলাদা রুম রয়েছে।

ঝুলন্ত কাঁচের হোটেল

ঝুলন্ত কাঁচের হোটেল

যার মধ্যে বাথরুমের সুবিধাও রয়েছে। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তারা এই হোটেলে গিয়ে ভ্রমণ করতে পারেন। যারা যেতে চান, তাদের উদ্যেশ্যে বলছি, এখানে যাওয়াটাও কিন্তু খুব একটা সহজ হবে না। কারণ এখানে যেতে হলে আপনাকে প্রায় ৪০০ফিট লম্বা খাড়া পাহাড়ে চড়তে হবে। আর এখানে এক রাত কাটানোর জন্য আপনাকে প্রায় ২৪ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। আর এসবের কারণে এই হোটেল সারা বিশ্বে ভ্রমন পিপাসুদের কাছে বিখ্যাত।

ক্যাপিলানো সাসপেনশন ব্রিজ

কানাডায় অবস্থিত ক্যাপিলানো সাসপেনশন ব্রিজ। এটি পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম একটি সুন্দর এক স্থাপনা। ব্রিজটি একটি নদীর উপর থেকে এভার গ্রীন ফরেস্টের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। ব্রীজটি ৪৬০ ফিট লম্বা, যা খুবই ঝুঁকিমুক্ত।

ক্যাপিলানো সাসপেনশন ব্রিজ

ক্যাপিলানো সাসপেনশন ব্রিজ

ব্রীজটি একসাথে ৯৬টি হাতির ওজন বহন করতে সক্ষম। প্রতি বছর ব্রীজটি দেখতে প্রায় ৯ লাখ টুরিস্ট আসে। আর ব্রীজটি সেখানকার আনুষ্ঠানিক দিনগুলোতে বিশেষ করে সাজানো হয়। তবে ব্রীজটির উপর থেকে যাওয়ার সময় আপনার সাহসের পরীক্ষাটাও হয়ে যাবে।

হেন্না হোটেল

এটি বিশ্বের এক মাত্র হোটেল, যেটি কিনা রোবট দ্বারা পরিচালিত হয়। এই হোটেলটি ২০১৫ সালের মাঝামাঝি চালু হয়। এখানে প্রায় ১৪৪ টি রুম রয়েছে। সবগুলো রুমে কাজ করার জন্য মোট ১৮৬ টি রোবট রাখা হয়েছে। কখনো একটি নারী রোবট আবার কখনো একটি ডায়নোসর রোবট আপনাকে অভ্যর্থনা জানাতে পারে। এরাই আপনাকে খুঁজে দিবে পছন্দের সেরা রুমটি। এ হোটেলে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রেস ডিটেক্টর সিস্টেমে।

আর তাই এই হোটেলে থাকাকালে আপনাকে কোনো রুমের চাবি দেয়া হবে না। যদি কখনো কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় তাহলে রুমে থাকা কম্পিউটারে রিকুয়েস্ট করতে হবে। তৎক্ষণাৎ কোনো একটি রোবট আসবে আপনার সমস্যা সমাধানের জন্য। আপনার বেডের পাশে একটি রোবট থাকবে। হোটেল সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে বেডের পাশে থাকা রোবটটি আপনাকে জানায় দিবে যেকোনো তথ্য।

জাপানের হেন্না হোটেল

জাপানের হেন্না হোটেল

এখানকার রোবটগুলো খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নের কাজ সব কিছুই করে দিবে। কিন্তু ৮ থেকে ১০ জন মানুষ প্রতিদিন আসে এখানে। যারা এই হোটেলের সবকিছু ঠিক মতো হচ্ছে কিনা সেইটার দেখাশুনা করা দায়িত্বে থাকে। রোবট মানুষের জীবনকে কতটা সহজ করে দিতে পারে তার একটি দৃষ্টান্ত প্রমাণ রয়েছে এই হোটেলে। কারণ এমন হোটেলের সবকিছু রোবট দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। রোবট মানুষের জীবন অনেক সহজ করে দিতে পারে, যার ছোট একটি উদাহরণ হতে পারে জাপানের হেন্না হোটেল।

ভাসমান সেতু

আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিত্যনতুন স্থাপনা তৈরিতে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। যশোরের মনিরামপুরে অবস্থিত দেশের দীর্ঘতম ভাসমান সেতু্। সেতুটি চার ফুট চওড়া আর প্রায় এক হাজার ফিট দীর্ঘ।

যশোরের ভাসমান সেতু

যশোরের ভাসমান সেতু

সেতুটিতে ব্যবহার করা হয়েছে, ১৮ টন লোহার এ্যাংগেল আর ১৫ টন স্টীলের পাত এবং ৩৩৯ টি বড় প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে। এটি বাংলাদেশের তৈরি প্রথম ভাসমান সেতু।

ঝুলান্ত সুইমিং পুল

দুবাই ফেস্টিবল সিটি হোটেলের ৩৬ তলায় অবস্থিত এই সুইমিং পুল। যা দেয়ালের বাইরে শুণ্যে ঝুলানো অবস্থায় আছে। পুলের দেয়াল ও ফ্লোর খুবই মজবুত এমনকি স্বচ্ছ কাঁচের দ্বারা তৈরি।

ঝুলন্ত সুইমিংপুল

ঝুলন্ত সুইমিংপুল

এর মধ্য থেকে দুবাই শহরের সুন্দর্য খুব ভালভাবে উপভোগ করা যায়। এই পুল থেকে দুবাইয়ের উঁচু উঁচু বিল্ডিং এর ভাল কিছু সিন পাওয়া যায়। যার মধ্যে বুর্জ খলিফা অন্যতম।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)