দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো-প্রধানমন্ত্রী

অনিয়মকারীদের কাউকে ছাড়া হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্যাসিনো নিয়ে মারামারি খুনোখুনি হবে—এগুলো টলারেট করব না। আমি কষ্ট করে সবকিছু করছি দেশের জন্য, দেশের উন্নয়ন করছি, এর ওপর কালিমা আসুক, সেটা আমি কোনোভাবে হতে দেব না। আমি কাউকেই ছাড়ব না।

ছাত্রলীগ নেতাদের সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তোমাদের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছি। বিশ্বাস ও আস্থার মর্যাদা রেখে কাজ করবে।’ ক্ষমতা প্রদর্শনের রাজনীতি ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রনেতাদের বিনয়ী থাকতে হবে। যত উপরে উঠবে তত বিনয়ী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মোটরসাইকেল নিয়ে চলতে হবে, প্রোটোকল নিয়ে চলতে হবে, ক্ষমতার সঙ্গে চলতে হবে, এগুলো করা যাবে না। এগুলো করলে সাময়িকভাবে কিছু টাকাপয়সা হবে কিন্তু হারিয়ে যাবে। সেটা হবে দুঃখজনক। এটা আমি তোমাদের কাছ থেকে চাই না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু পেলেই নিয়ে নিতে হবে—এই ধারণা নিয়ে রাজনীতি করলে কিছু পাওয়া যায় না। যখন যেভাবে চলার সেই শিক্ষা নিয়ে চলতে হবে। সেই শিক্ষা বাবা-মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলাম।’ এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা নিজের জীবনে ত্যাগ স্বীকার করার কথা জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কম্প্রোমাইজ করতে বলেছিল, তখন বলেছিলাম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে নেই।’

নিজের জীবনে রাজনৈতিক প্রতিকূলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যত প্রতিকূল অবস্থা আমার জীবনে মোকাবিলা করতে হয়েছে, বাংলাদেশের আর কারো হয়নি। আমাকে অনেক অফার দেওয়া হয়েছে। জীবনে কখনো কম্প্রোমাইজ করিনি।’

ছাত্রলীগকে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে নিতে হবে। যাতে সংগঠন আরো শক্তিশালী হয়। তিনি বলেন, ‘নীতি-আদর্শ, সততা, সংযম নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। যদি সেটা না করো, একটা আদর্শ নিয়ে রাজনীতি না করলে ভবিষ্যতে কার কাছে দেশ রেখে যাব। তোমাদের কাজে মূল্যায়নের মধ্যে দিয়ে আসতে হবে, আগামী দিনের নেতৃত্বে। মানুষ তাহলে সাদরে গ্রহণ করবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি চাই, একটা আদর্শ নিয়ে চলো, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাও। ২০৪১ পর্যন্ত তোমরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্ররা লেখাপড়া করতে এখানে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) আসে। তাদের সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। ছাত্রনেতাদের বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবন, কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর সিক্রেট ডকুমেন্ট পড়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখান থেকে ভালো রাজনৈতিক শিক্ষা পাওয়া যায়।

কোনো কাজই যেন সরকারের সুনাম নষ্ট না করে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। ক্ষমতায় গেলে সাধারণ মানুষ বিরক্ত হলে কষ্টার্জিত সফলতা, সরকার পরিচালনার সুনাম নষ্ট হবে। সাধারণ মানুষ বিরক্ত হয় এমন কোনো কাজও করা যাবে না। সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে নিজের শ্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খেটে দেশকে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছি, এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। যারা বলেছিল এদেশ বটমলেস বাস্কেট হবে তারাও স্বীকার করেছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)