তালায় দুর্ঘটনায় প্রেমিকের মৃত্যু, প্রেমিকার ‘আত্মহত্যা’

ভালোবেসে একসঙ্গে ঘর বাধা না হলেও একসঙ্গে সৎকার হলো সাতক্ষীরার এক প্রেমিক যুগলের। বুধবার বিকেলে নিজ নিজ এলাকার শশ্মানে তাদের সৎকার করা হয়।

বৈশাখী সরকার আত্মহত্যার আগে চিরকুটে লিখেছে, ‘আমি অনেক ভালো মা-বাবা পেয়েছিলাম। কিন্তু তাদের সঙ্গে থাকা হলো না। সরি। আমাকে মাফ করে দিও। আমার মা-বাবাকে সবাই দেখে রেখো। আমার মনটা আগেই মরে গেছে, এখন আমিও চলে যাচ্ছি।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি লাগানোর সময় খুঁটির নিচে চাপা পড়ে মারা যায় মিলন ঢালী। মিলন ঢালীর লাশ বাড়ির পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার খবর জেনে ওই রাতে ঘরের মধ্যে ফ্যানে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে প্রেমিকা বৈশাখী সরকার।

নিহত মিলন ঢালীর চাচাতো ভাই সুকুমার ঢালী জানান, মিলন স্থানীয় কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। পারিবারিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় বাগেরহাটের ফরিকহাট এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি লাগানোর কাজ করতো। মঙ্গলবার সেখানেই মারা যায় মিলন। বুধবার বিকেলে তার সৎকার করা হয়েছে।

অপরদিকে, তালার খেশরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক রাজীব হোসেন রাজু জানান, মিলন ঢালী ও বৈশাখীর মধ্যে কয়েক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারের সকলেই বিষয়টি জানে। পারিবারিকভাবে তাদের সিদ্ধান্ত ছিল, মেয়েটি এসএসসি পাস করার পর তাদের মধ্যে বিয়ে দেবে। ছেলেটি পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে মেয়েটির বাড়ির পাশ দিয়ে তার মরদেহটি নিয়ে যায়। ঘটনাটি জানার পর মেয়েটি বিমর্ষ হয়ে যায়। রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করে নিজ ঘরে ঘুমাতে যায়।

চেয়ারম্যান আরও জানায়, রাতের কোনো এক সময় একটি চিরকুট লিখে ঘরের মধ্যে ফাঁস দেয় সে। সকালে ঘরের দরজা না খুললে বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে বৈশাখীকে। চিরকুটে মেয়েটি লিখেছে, ‘আমি অনেক ভালো মা-বাবা পেয়েছিলাম। কিন্তু তাদের সঙ্গে থাকা হলো না। সরি। আমাকে মাফ করে দিও। আমার মা-বাবাকে সবাই দেখে রেখো। আমার মনটা আগেই মরে গেছে, এখন আমিও চলে যাচ্ছি।’

তালা থানার ওসি মো. মেহেদী রাসেল বলেন, প্রেমিককে হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আত্মহত্যা করেছে বৈশাখী নামের মেয়েটি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বুধবার বিকালে সৎকার হয়েছে মেয়েটির। প্রেমিক মিলনের জন্য আত্মহত্যা করেছে সে। একটি চিরকুটও লিখে গেছে।

সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাশ দেখে ধারণা করা হচ্ছে দুর্ঘটনায় মারা গেছে মিলন ঢালী। বিকেলে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)