ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটের দিকে বিশ্ব

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তন সংঘাত ও বিশ্ব উষ্ণায়ন। আবহাওয়া পরিবর্তন আগামী দিনগুলোতে খাদ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে। খাদ্য সংকট বিষয়ে দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ফাও এর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ১১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার অভাব সৃষ্টি করে গত বছর জুড়ে। বিশ্বের ৫৩টি দেশ চরম খাদ্য সংকটে পড়ে। এর মধ্যে ইয়েমেনের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এর পরের অবস্থানে কঙ্গো এবং আফগানিস্তান।

জাতিসংঘের আরেকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে খাদ্যের চাহিদা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে, আর উৎপাদন কমে যাবে প্রায় ৩০ শতাংশ। এর প্রধান কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন পরিচালিত দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) এর আওতায় রয়েছে ১৯টি দেশ। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পুরো পৃথিবী জুড়ে চাষাবাদের বহু জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাবে। জমিগুলো উৎপাদন ক্ষমতা হারাবে। তৈরি হবে মরুভূমি। খাদ্য সংকটের ফলে দেখা দেবে বৈষম্য। ফলে বিভিন্ন প্রজাতি অবলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও ভূমি ব্যবহার সম্পর্কিত আইপিসিসির নতুন বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের আধা বিলিয়ন মানুষ এমন ভূমিতে বসবাস করে যা ধীরে ধীরে শুষ্ক, চাষাবাদ অযোগ্য মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। যে হারে কৃষি জমিকে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে করে ১০ থেকে ১০০ গুণ নষ্ট হচ্ছে।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো, মাংস ও দুগ্ধ শিল্প, নির্গমন হিসাবে অটোমাবাইল সেক্টরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। জানা যায়, কৃষিজমির ব্যবহারের ৮৩ শতাংশ এবং কৃষকের উৎপাদনের ফলে ৬০ শতাংশ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনে অবদান রাখে। গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের প্রায় এক চতুর্থাংশ জমি ব্যবহার থেকে আসে।

উদ্ভিদ-ভিত্তিক নিরামিষ আহারে যাওয়ার পরামর্শ ছাড়াও প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী প্রচুর খাদ্য অপচয়, জমি ব্যবস্থাপনা, ফসলের বৈচিত্র্য, অল্প নিবিড় কৃষিকাজ পদ্ধতি, জমি পুনরুদ্ধার এবং খাদ্য বিতরণকারী ব্যবস্থার উন্নতি সম্পর্কে সচেতনতায় উৎসাহ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে, ঘাসভূমি, ম্যানগ্রোভ বন এবং জলাভূমিগুলোর পুনরুদ্ধার করে পরিবেশে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসকে জোর দেয় এমন উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)