ইতিহাসের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল আজ

যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার হামলার ১৮তম বার্ষিকী আজ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এ হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়। এই দিন থেকেই পুরো বিশ্বে সন্ত্রাসের যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তা এখনো কাটেনি। এমনকি বিশ্বের কয়েকটি দেশে এখনো চলছে যুদ্ধ। সারাবিশ্বে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে এই নারকীয় হামলা।

আজকের এই দিনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টায় সন্ত্রাসীরা চারটি বিমান ছিনতাই করে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার বা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর পেন্টাগনে (স্থানীয় সময় পৌনে ১০টা) হামলা চালায়। হামলায় প্রায় এক হাজার কোটি ডলারের সমপরিমাণ সম্পদ ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়। সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আল-কায়েদাকে দায়ী করা হয় হামলার জন্য।

হামলায় সর্বমোট দুই হাজার ৯৯৬ জন নিহত হন। এর মধ্যে চারটি বিমানে থাকা ১৯ সন্ত্রাসীও ছিল। হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই যুদ্ধ অব্যাহত আছে।

২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন কমান্ডো অভিযানে নিহত হন হামলার পেছনে দায়ী বলে পরিচিত আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন। কিন্তু যারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল, অর্থ ও সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করেছিল তাদের এখনো বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়নি। তবে তহবিল দিয়ে সহায়তার অভিযোগে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। মামলাটি বিচারাধীন। কেবল যুদ্ধ নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে মুসলিম বিদ্বেষও বেড়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে তালেবান আল কায়েদা নেতা লাদেনকে সহায়তা করছে। সেই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র অক্টোবরে আফগানিস্তানে সামরিক হামলা চালায়। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ১২ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আফগানিস্তানে প্রায় ৮ লাখ ৭৫ হাজার এবং পাকিস্তানে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। লিবিয়ায় বেসামরিক নাগরিক ও সৈন্যসহ ৭৭ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ইরাকে শিয়া-সুন্নি বিরোধ দেখা দেয়। সেই যুদ্ধ গিয়ে পড়ে সিরিয়ায় যা এখনো চলছে।

সিরিয়া যুদ্ধে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এক গবেষণায় বেসামরিক ও সৈন্যসহ ৩ লাখ ৫৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। সোমালিয়ায় ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার মানুষ মারা যায়। এর আগে থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে দেশটিতে প্রায় ৬ লাখ ২৫ হাজার মানুষ নিহত হয়। ইয়েমেনে এক লাখ ২০ হাজার থেকে দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে যুদ্ধে।

এছাড়া মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ও ন্যাটো বাহিনীর অনেক সৈন্যও মারা গেছেন। সব দেশেই যুদ্ধ এখনো চলছে। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বারবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে যাতে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নাইন ইলেভেনের ধাক্কা এখনো মানুষকে সহ্য করতে হচ্ছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)