দেবহাটায় মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল দুই মাসের জন্য বরখাস্ত
দেবহাটায় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া মাদ্রসা ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনা তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় এবার দুই মাসের জন্য অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক শামসুল সরদার (৪৫) কে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত শামছুল সরদার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া এলাহী বক্স দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও স্থানীয় মশিয়ার সরদারের ছেলে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির জরুরী সভায় সকল সদস্যদের সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশনের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল সরদারকে বরখাস্ত করা হয়।
এর আগে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শিক্ষক শামসুল সরদারকে এক সপ্তাহের জন্য বরখাস্ত সহ ঘটনাটির তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দরা। বর্বরোচিত এ ঘটনার ভিকটিম ওই সপ্তম শ্রেনীর মাদ্রাসা ছাত্রের পরিবার জানায়, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা শুরুর আগে কোচিং করতে গেলে ওই ছাত্রকে শিক্ষক শামসুল সরদার জোরপুর্বক বলাৎকার করে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির কাছে অভিযোগ দায়ের করে ভিকটিমের পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির দায়িত্বে থাকা ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য সাংবাদিককে জানান, বলাৎকারের সাম্প্রতিক এ ঘটনাটির তদন্তকালে পুর্বের আরো অনেক বলাৎকারের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ইতোপুর্বেও একাধিকবার ছাত্রদের বলাৎকার করার কথা তদন্তকালে স্বীকার করেছে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক শামসুল সরদার। আর এসব অপকর্মের পর ভিকটিম ছাত্রদের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ঘটনার ধাঁমাচাপাও দিয়ে এসেছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল সরদার, মাদ্রাসার সুপার আব্দুল কুদ্দুস নাশকতা সহ একাধিক ফৌজদারী মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামী থাকলেও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমানের সাথে সখ্যতা থাকায় তারা সকলেই বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে মাদ্রাসায়। এমনকি মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কুদ্দুস একাধিকবার জেল হাজতে থাকার পাশাপাশি ২০১৩ সাল পরবর্তী দীর্ঘ সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়ালেও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমানের সহায়তায় কোন বাঁধা ছাড়াই শিক্ষক হাজিরা খাতা ও রেজুলেশন খাতাও ঠিকঠাক করে নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার সুপার আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে নাশকতা সহ একাধিক ফৌজদারী মামলা রয়েছে এটা সঠিক। তিনি পলাতক বা জেল হাজতে থাকলেও সরকারী নিয়ম মোতাবেক হাজিরা খাতা ও রেজুলেশন খাতা ঠিক করা হয়েছে। আর বলাৎকারের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল সরদারকে দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বরখাস্তের আগে থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল সরদার এখনও পালিয়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।