বন্যায় মৃত্যু নয়, অর্জুনসহ তিন সন্তানকে নদীতে ছুড়ে হত্যা করেছেন মা

এক ভিডিওতেই তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে। সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্রে উঠে এসেছিল, বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল বিহারের মুজাফ্ফরপুরের তিন বছরের শিশু অর্জুনের। অনেকেরই মনে পড়ে গিয়েছিল ভূমধ্যসাগরে মৃত সিরিয়ার সেই উদ্বাস্তু শিশু আয়লান কুর্দির কথা। বহু সংবাদ মাধ্যমেও এই খবর নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় পড়ে যায়।

কিন্তু এক দিন কাটাতে না কাটতেই উঠে এল ভয়ঙ্কর তথ্য। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টের সূত্রে জানা গিয়েছে, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়নি ওই শিশুর। ওই শিশুর মা তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুজফফরপুরের পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, শিশুটির মা-ও সে রকমই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই মহিলার আরও দুই সন্তান পানিতে ডুবে নিখোঁজ।

মুজফফরপুরের জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের দাবি, বন্যার জলে ভেসে গিয়ে মৃত্যু নয়, অর্জুনের মা তাকে হত্যা করেছে। মুজফ্ফরপুরের জেলা শাসকের অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি মুজফফরপুরে হলেও এর সঙ্গে বন্যার কোনও যোগ নেই। জেলাশাসকের দফতর থেকে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই মহিলার নাম রিনা দেবী।

স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় তিনি নিজের চার সন্তানকেই নদীর ধারে নিয়ে যান। চার শিশুকেই কার্যত জলে ছুড়ে দিয়ে নিজেও জলে ঝাঁপ দেন রিনা দেবী। স্থানীয়রা ওই মহিলা এবং তাঁর সাত বছরের এক মেয়েকে উদ্ধার করতে পারলেও বাকিরা নিখোঁজ ছিল। কিন্তু অর্জুন-সহ তিন জন জলে তলিয়ে যায়। পরে অর্জুনের দেহ উদ্ধার হলেও এখনও অন্য দুই শিশুর খোঁজ মেলেনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, জলের মধ্যেই একটি উঁচু পাথরের উপর মৃতদেহ রাখা রয়েছে ওই শিশুটির। নদীর পাড়ে লোকজনের ভিড়। পাশেই জাল হাতে এক ব্যক্তি। সম্ভবত জাল ফেলে বাকি দুই শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।

যদিও বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়ায়, বন্যায় ফুলে ফেঁপে ওঠাবাগমতী নদীতে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল অর্জুন। এবং সেই কারণেই পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে।

বিহার সরকারের মন্ত্রীরা আবার বৃহস্পতিবারই উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদীর নেতৃত্বে একটি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে এমন এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারকে ‘নিরোর বেহালা বাজানো’র প্রসঙ্গ টেনেও আক্রমণ করেন। শুরু হয় তোলপাড়। তবে সত্যি সামনে আসার পর অবশ্য কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে নীতীশ কুমার সরকার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)