কোপায় চিলিকে হারিয়ে তৃতীয় আর্জেন্টিনা

দক্ষিণ আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকার গত দুই আসরের ফাইনাল খেলেছিল আর্জেন্টিনা ও চিলি। যেখানে দুবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চিলি, রানারআপ থেকেই শেষ করতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে।

সে দুই দলই এবারের কোপায় বাদ পড়ে গিয়েছে সেমিফাইনাল থেকে। ফলে তারা মুখোমুখি হয়েছিল তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। যেখানে চিলির বিপক্ষে আগের দুই ফাইনালের প্রতিশোধ নিয়ে ২-১ গোলের জয়ে তৃতীয় হয়ে কোপা শেষ করেছে আর্জেন্টিনা।

দলের জয়ে আর্জেন্টিনার পক্ষে গোল দুইটি করেছেন সার্জিও আগুয়েরো ও পাওলো দিবালা। চিলির পক্ষে একটি গোল শোধ করেছেন স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় লিওনেল মেসির সতীর্থ আর্তুরো ভিদাল।

এদিকে শিরোপা জেতার স্বপ্ন শেষ হওয়ার পর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে নেমে হতাশার এক অর্জনই হলো আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির। প্রায় ১৪ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো লাল কার্ড দেখতে হয়েছে তাকে। ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার জার্সিতে নিজের অভিষেক ম্যাচেই প্রথম লাল কার্ড দেখেছিলেন মেসি।

করিন্থিয়াস এরেনায় ম্যাচের ৩৭ মিনিটের মাথায় পাওলো দিবালার বাড়ানো বল মাঠের মধ্যে রাখতে গিয়ে চিলির ডিফেন্ডার গ্যারি মেডেলের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় মেসির। মেডেল বারবার ধাক্কা মারতে থাকলেও মেসি ছিলেন নির্লিপ্ত।

তবু মেডেলকে ফাউল করতে উৎসাহিত করার অপরাধে এবং মাথা দিয়ে আঘাত করার ইঙ্গিত করায় মেডেলের সঙ্গে মেসিকেও লাল কার্ড দেখান মেসি। ফলে দুই দলই পরিণত হয় দশ জনে।

এদিকে মেসি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেও প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকে আর্জেন্টিনাই। তৃতীয় হওয়ার মিশনে ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিটেই জোড়া গোল করে ফেলে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।
ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় মাঝ মাঠ থেকে মেসির বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি-কিক ধরে প্রায় একার নৈপুণ্যে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন সার্জিও আগুয়েরো। এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

মাঝমাঠে ফাউল করা হয়েছিল মেসিকে। সেখান থেকে তড়িঘড়ি ফ্রি-কিক নিয়ে তিনি বল বাড়িয়ে দেন আগুয়েরোর উদ্দেশ্যে। যেটি ধরে গোল করতে ভুল করেননি আগুয়েরো।

লিড দ্বিগুণ করতে খুব বেশি সময় নেননি পাওলো দিবালা। মিনিট দশেক পরে জিওভানি লো সেলসোর কাছ থেকে দারুণ এক পাস পেয়ে যান তিনি। পরে প্রথম ছোঁয়ায় ডিফেন্ডার এবং দ্বিতীয় ছোঁয়ায় পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে। এ দুই গোলের লিড নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করেছে আর্জেন্টিনা।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আর নিজেদের খেলার ছন্দটা ধরে রাখতে পারেননি আগুয়েরো-দিবালারা। সুন্দর ফুটবলের চেয়ে শরীরনির্ভর কুৎসিত খেলার প্রদর্শনী চলতে থাকে পুরো দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে। যেখানে ছাড় দেননি কেউ কাউকে। তাই তো মেসি-মেডেলের লাল কার্ড ছাড়াও দুই দল মিলে হলুদ কার্ড দেখেছে আরও ৮টি।

এরই মাঝে ম্যাচের ৫৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ করে চিলি। বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পায় গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়নরা। রিপ্লেতে দেখা যাচ্ছিলো লো সেলসোর করা ফাউলটি হয়েছে ডি-বক্সের বাইরে। তবু চিলির পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সহজ সুযোগ পেয়ে গোল করেন ভিদাল।

তবে ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল করতে পারেনি কোনো দল। যার ফলে ২-১ গোলের জয়েই তৃতীয় স্থান পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)