কালিগঞ্জে ১২ বছরের অনুর্ধো ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে

বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া জন্ম সনদ অনুযায়ি ফারজানা ইয়াসমিনের জন্ম তারিখ ২০০৭ সালের ১৩ আগষ্ট। সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলার সোনাটিকারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ও একই গ্রামের হাফেজ আশরাফুল ইসলাম ও আমেনা খাতুনের মেয়ে সে। গত সোমবার ১০ জুন তার বয়স হয়েছে ১১ বছর ১০ মাস চারদিন। গত ১০ জুন ফারজানা ইয়াসমিনকে (১১) বিয়ে দেওয়া হয়েছে একই গ্রামের বাবর আলীর ছেলে আনারুল ইসলামের(৩৫) সঙ্গে। সরেজমিনে রোববার সন্ধ্যায় সোনাটিকারী গ্রামে গেলে ঐ স্কুল ছাত্রীর পিতা চৌবাড়িয়া গাজী পাড়ার জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আশরাফুল ইসলাম বলেন, তার মেয়েকে বিয়ের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।

মেয়ের মা আমেনাই সব। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী মনিরুল ইসলাম, মাফুজা খাতুন, মেয়ের চাচা শওকত হোসেন ও আমির আলী জানান, মেয়ের মা আমেনা খাতুন, নহিদ হোসেন, হয়েত আলীসহ কয়েক জনের সহযোগিতায় গত ১০ জুন সোমবার রাত ৮ টায় তাকে জোরপূর্বক নলতার মাঘুরালীর একটি বাড়িতে নিয়ে নীল রংয়ের রেজিষ্টার বইতে সাক্ষর করতে বললেন। মারপিটের ভয় দেখালে সাক্ষর করতে বাধ্য হয় ফারজানা। পরে তাকে দেবহাটা উপজেলার নাংলা গ্রামে নুর ইসলাম হুজুরের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। হাফেজ আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি জানতে পেরে গত ১৩ জুন বৃহষ্পাতিবার দুপুরে ইউপি সদস্য মনোয়ারা খাতুনের সহযোগিতায় মেয়েকে উদ্ধার করে এনে তার ভাই শওকতের বাড়িতে রেখে দিয়েছেন। মেয়েকে ফিরে ফেতে জটিলতা নিরসনে ভাড়াসিমলা ইউপি চেয়ারম্যান নুরমোহাম্মাদ বিশ্বাস, সদস্য মনোয়ারা খাতুন ও সদস্য পিয়ার আলীর কাছে আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। ফারজানা ইয়াসমিন পড়াশুনা করার স্বার্থে বাবার কাছে ফিরে আসার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছেলের পিতা সোনাটিকারী গ্রামের বাবর আলী বলেন, তার ছেলে আনারুল বিয়ে করেছে শুনেছি। তবে তাকে জাননো হয়নি। বউমাকে বাড়িতে আনা হয়নি। সোনাটিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদানন্দ ম-ল জানান, ফারজানার বয়স জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ি ১২ বছরের নীচে। ঈদের পর স্কুল খুললে ফারজানা না আসায় খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে তার বিয়ে হয়েছে একই গ্রামে। এব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মাদ বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি শোনার পর সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে মীমাংসা করে দিতে বলেছেন। সদস্যা মনোয়ারা খাতুন বলেন, মেয়েকে নাংলা গ্রামের নুর ইসলামের কাছ থেকে নিয়ে তার চাচা শওকত আলীর বাড়িতে রাখা হয়েছে। ইউপি সদস্য পিয়ার আলী বলেন, বিয়ের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। কালিগঞ্জ থানায় দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইন-চার্জ বলেন, তিনি কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)