কালিগঞ্জের পল্লীতে জামে মসজিদের ইমামকে লাঞ্ছিত করলেন সভাপতি

কালিগঞ্জের পল্লীতে জামে মসজিদের পেশ ইমাম কে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করার অভিযোগ উঠেছে মসজিদ কমিটির সভাপতি‘র বিরুদ্ধে। যা সরেজমিনে মুসুল্লিদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।

ঘটনাটি উপজেলার বাগ নলতা দরগাবাড়ি জামে মসজিদে ২৮ শে রমজানে ঘটেছে। ৭ জুন আসরের নামাজবাদে সরেজমিনে জানাগেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার বাগ নলতা দরগাবাড়ি জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আওরঙ্গজেব সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায়শঃ মসজিদের ইমামদের সহিত রুঢ় আচরণ, জনসম্মুখে অপদস্থ করা, অশ্লীল ভাষায় গালিগলাজ ও লাঞ্ছিত করে থাকেন বলে স্থানীয় মুসল্লিগন অভিযোগ করেন। এমন একটি ঘটনা পবিত্র রমজান মাসের ২৮ শে রমজানে মসজিদের ভিতরেই ঘটিয়েছেন তিনি।

নামে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাকলেও কাওকে তোয়াক্কা না করে এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি সব একার সিদ্ধান্তে করে আসছেন।ঘটনার সময় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওঃ সিদ্দিকুর রহমানকে তিনি বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ জুতা তুলে পিটাইতে উদ্যত হন। এঘটনা বর্ণনা করেন মসজিদে ইতেকাফরত বাগ নলতা গ্রামের কামাল উদ্দিন কারিকরের পুত্র আহাদ আলী(৭৫), মান্দার কারিকরের পুত্র মহাসিন আলী(৭২) শহর আলী কারিকরের পুত্র ইয়াসিন আলী (৬৯) । এছাড়াও মসজিদ কমিটি সদস্য এমদাদুল হক কারিকর ও নওশের আলী কারিকর অনুরূপ ভাবে সভাপতির অসদাচরণের নানান বর্ণনায় অভিযোগ করেন।

মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি সামসুর রহমান পাড় বলেন সভাপতির একটু মুখ দোষ আছে, তার কারণেই বাগ নলতা দরগাবাড়ি জামে মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিন থাকে না। তবে ঘটনার সময় আমি ছিলাম না, পরে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব দ্রুত বসেই সমাধান করার চেষ্টা করবো।

এছাড়াও মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি আরশাদ আলী কারিকর, কোষাধ্যক্ষ কওছার আলী, প্রচার সম্পাদক সবেদ আলী কারিকর ও সদস্য সাইফুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান, মসজিদ কমিটির সভাপতি দীর্ঘদিন যাবৎ স্বেচ্ছাচারিতা ও একগুয়েমী ভাবে চলার কারণে মসজিদে এক-দুই মাস অন্তর ইমাম পরিবর্তন হয়। যার কারণে আমরা অনেক সমস্যায় রয়েছি। সংশ্লিষ্টই এলাকায় আরওঙ্গজেব একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি। তার হীন অপরাধের বিরুদ্ধে কেহ মুখ খুলতে সাহস পায়না। মসজিদের সহায় সম্পত্তির ও যথাযথ হিসাব মুসুল্লিরা জানতে পারেন না।

এদিকে সভাপতির দ্বারা লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাফেজ মাওঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন ২৮ রমজান তারাবির নামাজের পরে ২৯ রমজানে ইফতারি দাতার ২ জনের স্থলে লিখিত ১ জনের নাম ঘোষণা করাকে কেন্দ্র করে সভাপতি সাহেব আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভিতরেই অশালীন মন্তব্যে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে, এমনকি তুই তোক্কারী করে আমাকে জুতা পিটা করতে উদ্যত হয়। আমি এসময় তাকে নিবৃত করতে অনুরোধ করলেও তিনি উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে স্থানীয় মুসুল্লিদের পরামর্শ মতে ২৯ রমজানে তারাবির নামাজের পরে চলে আসি।

হাফেজ মাওঃ সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন সভাপতি আওরঙ্গজেব এর মারমুখী ভূমিকার কারণে ইতি পূর্বে মাওঃ সিরাজুল ইসলাম ও মাওঃ আব্দুস সত্তার অত্র মসজিদের ইমামতি ছেড়ে চলে যান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আওরঙ্গজেবের নিকট মুঠো ফোনে (০১৯৯২-৩১২৮২২) একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগকারীরা অতিদ্রুত জোরপূর্বক মসজিদ কমিটির সভাপতি পদে থাকা আরওঙ্গজেবকে বহিষ্কার সহ মসজিদের মুসুল্লিদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি পুনঃ গঠনের দাবি জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)